প্রতি বছরই দুই বার করে ঈদ আসে। ঈদকে
উপলক্ষ করে নানা দিকে শুরু হয় আনন্দ আয়োজনের উৎসব।
মানুষের নানা প্রচেষ্টার সাথে তাল মেলাতে দৈনিক,
সাপ্তাহিক পাক্ষিক, পত্রিকাগুলো নানা
আয়োজন করে প্রকাশ করে বিশেষ ঈদ সংখ্যা। প্রত্যেকের দৃষ্টিতে সেরা লেখকের লেখাটাই তারা
তুলে দেয় পাঠকের হাতে। পাঠক কিনে পড়ে সেইসব ঈদ সংখ্যা। এইসব
ঈদ সংখ্যার লেখাগুলোই পরবর্তিতে আরো পরিমার্জিত অবস্থায় বই আকারে প্রকাশ হয় বই
মেলায়। পাশাপাশি ভিস্যুয়াল মিডিয়ায় বিনোদনের চেষ্টায় দারুণ
হুরুহুরি করে টেলিভিশনগুলো। টেলিভিশনগুলোর আয়োজনটাকে হুরুহুরি বলি এই কারণে
যে, সারা বছর মানুষ টিভি
অনুষ্ঠানগুলোর দিকে মুখ ফিরে তাকিয়ে থাকে ভালো কিছু করে না। করলেও
সেটা এতই নগণ্য যে সে কথা বলার অপেক্ষাই রাখে না। আর এই
সুযোগেই ভারতীয় টিভিগুলোই দখল করে রাখে রিমোটের অধিকার। সে যাই
হোক, প্রতিবছরই ঈদের সময় ভালো ভালো
অনুষ্ঠান, নাটক ও টেলিছবি প্রচার করে টেলিভিশনগুলো। তবে এত
এত বিজ্ঞাপন আর এত এত অনুষ্ঠানের চাপে সেইসব ভালো কাজগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই
হারিয়ে যায়। মানুষের মনেই থাকে না সে কি দেখা শুরু করেছিলো আর কি
দেখছে। এই যন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতে কেউ কেউ তো ঈদের সময় টিভিই
দেখে না। আমি অবশ্য তাদের দলে নই। আমি
পূর্ণাঙ্গ টিভি সূচি হাতে নিয়ে নিজের পছন্দের একটা সূচি দাঁড় করাই। তারপর
সেটা নিয়ে দেখতে বসি। যদিও সেখানে তুমুল বিজ্ঞাপনের চাপ থাকেই। আমার
এইসব টিভি অনুষ্ঠানের ভেতর চল্লিশ মিনিটের খন্ড নাটকই প্রধান্য পায় বেশী।
মাঝে
মাঝে বিষয় বৈচিত্র আর নির্মাতা ভেদে তা টেলিফিল্ম,
ফিল্মের দিকে নজর যায়। কারণ, নাটক দেখতেই ত্যাক্ত বিরক্ত হয়ে যাই
কিনা! অন্যগুলো দেখতে গেলে তাই প্রাণ উষ্ঠাগত হবার সমূহ আশঙ্কাও থাকে। এইবার
জানিয়ে দেই আমি কোন চ্যানেলর কোন নাটকটি দেখতে আগ্রহী।
আমার পছন্দের অনেক নির্মাতাই এখন পর্যন্ত
বিটিভিতে নাটক প্রচার করতে পারে নি। এটা যতটা না তাদের ব্যার্থতা তারচেয়ে বেশী
ব্যার্থতা টিভি কর্তৃপক্ষেরই। কারণ, যত বেশী পুরণো প্রতিষ্ঠান তত বেশী অব্যবস্থাপনা তা তো আমরা জানিই। তাই
এবার ঈদে বিটিভিতে দেখার মতো আমার আগ্রহের নাটক মাত্র একটি। আর তা
হলো ঈদের তৃতীয় দিন সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে হাসান শিকদারের রচনা ও পরিচালনায় পতিত
বৃদ্ধ ও এক যৈবতী নারী ইতিবৃত্ত।
হাস্যরসাত্মক নাটক নির্মাণ করে পরিচিত পাওয়া
সালাউদ্দিন লাভলু যে এর বাইরেও ব্যতিক্রম ধর্মী এবং দুর্দান্ত নাটক বানাতে পারেন
তা তিনি প্রমাণ করেছেন একাধিকবার। আর তাই ঈদের দিন রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে ফারুক
হোসেনের রচনায় সালাউদ্দিন লাভলুর পরিচালনায় ফর দ্যা পিপল দেখতে আগ্রহী আমি।
অনিমেষ আইচের কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। তার
নিজের লেখা ও পরিচালনায় অসময় দেখার
জন্য তো ঈদের তৃতীয় দিন রাত ৯টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতেই হবে।
এছাড়া ঈদের দিন এভারেস্ট জয়ী সজল খালেদের নির্মিত
একমাত্র ছবি কাজলের দিনরাত্রী সময় পেলে দেখতে পারি। কারণ
ট্রেলার দেখে তেমন আগ্রহ তৈরি হয় নি।
পাশাপাশি ঈদের দ্বিতীয় দিন আনিসুল হকের রচনায়
গোলাম কিবরিয়ার পরিচালনায় পুরাঘটিত বর্তমানও দেখতে পারি।
নাট্যকার হিসেবে উল্লেখযোগ্য মাসুম রেজার লেখা
নাটক ডেথ অব এ বার্থ ডে দেখাবে ঈদের পরদিন রাত ৮টা ৫০ মিনিটে।
পরিচালনা করেছেন সৈয়দ আওলাদ।
নির্মাতা গিয়াসউদ্দিন সেলিমের চিত্রনাট্যের নাটক জুয়ারি। ঈদের
দিন বেলা ৩টা ৫ মিনিটে প্রচারিতব্য এই নাটকই হয়তো চয়নিকা চৌধুরীর পরিচালিত প্রথম
নাটক যা আমি জেনেশুনে দেখতে বসবো।
এছাড়া সুযোগ হলে দেখতে বসবো ঈদের তৃতীয় দিন রাত
পৌনে আটটায় প্রচারিতব্য এজাজ মুন্নার রচনা পরিচালনার নাটক অফিস আওয়ার।
ঈদের দিন বিকেল চারটা পাঁচ মিনিটে মোহাম্মদ
আশিকুর রহমানের রচনা ও পরিচালনায় পরমার গল্পে আমি নেই দেখতে আগ্রহী। এই
নির্মাতার কোনও কাজ আগে দেখি নি। তাই আগ্রহটা কিছুটা বেশী।
অভিনয়শিল্পী ও নাট্য নির্দেশক আজাদ আবুল কালামের
রচনা ও বদরুল আনাম সৌদ এর পরিচালনায় পকেট ভরা শৈশব নামের নাটক।
প্রচারিত হবে ঈদের তৃতীয় দিন সকাল ১০টা ৫ মিনিটে। এত
চমৎকার নামের নাটক মিস করা উচিত হবে না।
নির্বাচিত ও ভালো অনুষ্ঠান প্রচারের সুনাম কিন্তু
এনটিভিরও বেশ পুরনো। তাই তাদের চ্যালেঞ্জও একটু বেশী। এবার
তাদের সূচি থেকে ঈদের দিন সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে রেদওয়ান রনির নাটক মানিব্যাগ
দেখার আগ্রহ রইলো।
ঈদের দ্বিতীয় দিন রাত ৮টা ১০ মিনিটে পান্থ
শাহরিয়ারের রচনা নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুলের পরিচালনায় মধ্যরাতের গল্প ও তালিকায়
থাকছে।
একই দিনে রাত সোয়া ১১টায় অপেক্ষায় থাকবো অনিমেষ
আইচ এর রচনা ও পরিচালনায় নাটক টক শো মাস্টার।
ঈদের তৃতীয় দিন রাত ৮টা ১০ মিনিটে থাকছে ফাহিম
ইবনে সারওয়ার এর রচনা ও দীপঙ্কর দীপনের পরিচালনায় কবির জন্য পাত্রী খোঁজা হচ্ছে।
বাংলাভিশন
ঈদের দিন রাত ৮টা ১০ মিনিটে বিপাশা হায়াতের লেখা
নাটক হে স্তব্ধ পূর্ণিমা যামিনি সুযোগ হলে দেখতে পারি।
ঈদের পঞ্চম দিনে একই সময়ের অনিমেষ আইচের নাটক ছাপ
তো অবশ্যই দেখবো।
ঈদের ষষ্ঠ দিন ৮টা ১০মিনিটের নাটক ওয়াহিদ আনাম এর
নাটক নেশা দেখবো।
ঈদের দ্বিতীয় দিন সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে আদনান ও
রুবায়েত মাহমুদের রচনায়, রুবায়েত
মাহমুদের পরিচালনায় চিলি চকলেট।
ঈদের দিন ভূতের নাটক। রাত
৯টা ২০ মিনিটে ভূতের ছানা। রচনা ও পরিচালনায় অনিমেষ আইচ।
আলভী আহমেদের রচনা ও পরিচালনায় ঈদের তৃতীয় দিন
রাত ৯টা ২০ মিনিটের নাটক ফুড চেইন।
ঈদের দিন রাত ৯টায় ইকবাল হোসাইন চৌধুরীর লেখা
রেদওয়ান রনির পরিচালনায় বাঘবন্দী-দ্যা মাইন্ড গেম।
ঈদের দ্বিতীয় দিন রাত পৌনে আটটায় মশিউল আলমের
লেখা ও রতন পালের পরিচালনায় একটি ভালো লাগার গল্প।
তৃতীয় দিন রাত পৌনে আটটায় মাতিয়া বানু শুকু'র লেখা ও পরিচালনায় তারাদের
লুকোচুরি।
ঈদের পরদিন মাতিয়া বানু শুকু'র লেখা ও যুবরাজ খানের পরিচালনায় সবুজ
ডানা তবু উড়ে যেতে মানা।
আশুতোষ সুজনের রচনা ও পরিচালনয় ঈদের তৃতীয় দিন
রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে আহ সমুদ্র!
ঈদের তৃতীয় দিন (সময় বলতে পারছিনা) গিয়াসউদ্দিন
সেলিমের নাটক ওয়ারিশ নামা। এছাড়া যদি সময় হয় তবে মাবরুর রশিদ বান্যা'র পরিচালনয় টেলিছবি এ্যালিয়েন ও
রুম্পার গল্প দেখতে পারি।
ঈদের পঞ্চম দিন অনিমেষ আইচের নাটক জমজ।
অধিকাংশ সূচিই পত্রিকা থেকে পাওয়া এবং ঈদের
তিনদিন পর্যন্ত। হাতে গোনা কয়েকটি চ্যানেলের পূর্ণাঙ্গ সূচি হাতে পেয়ে
যাওয়ায় তাও সংযুক্ত হয়েছে। কোনও প্রডাকশনেরই টিভিতে প্রমোশন দেখে নির্বাচন
করা সম্ভব হয় নি।
0 মন্তব্য(গুলি):