
বিভুতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর পথের পাঁচালি উপন্যাস থার্ড ইয়ারে পাঠ্য ছিলো। কিন্তু সাহিত্যের ছাত্র হিসেবে আমি বারবার চেষ্টার পরও এই উপন্যাস পড়ে শেষ করতে পারি নি। এইটা আমারই অযোগ্যতা। কিন্তু পথের পাঁচালি ছবি দেখতে গিয়া আমি অন্য কোথাও মনযোগ দিতে পারিনি। এই সফলতা ছবির ও ছবির পরিচালকের। একই রকম কথা আমাকে বলতে হয় অপুর সংসারের ক্ষেত্রেও। আমার বরং পথের পাঁচালির চেয়ে অপুর সংসারকে বেশী আনন্দ ও বেদনাময় মুগ্ধতার আশ্রয় বলে মনে হয়।
০২. দ্যা ব্রিজ অন দ্যা
রিভার কাওয়াই (১৯৫৭), পরিচালক- ডেভিড লিন
তসলিমা নাসরিন তার বাবার কাছে এক খোলা চিঠিতে এই ছবির শেষ দৃশ্যে কাওয়াই নদীর ওপর যখন ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ছে আর যাত্রী বোঝাই ট্রেনটি যখন ঐ ভাঙ্গা ব্রিজ দিয়ে নদীতে ভেঙ্গে পড়ছে তখনকার বর্ণনা দিয়েছিলেন। বর্ণনা শুনে গায়ের লোম দাড়িয়ে পরে। আমার মনে আছে, ঐ হোস্টেলে বিটিভিতে দেখা এই ছবি শেষে একা একা কেঁদে কেঁদে টিভিরুম ছেড়েছিলাম।
তসলিমা নাসরিন তার বাবার কাছে এক খোলা চিঠিতে এই ছবির শেষ দৃশ্যে কাওয়াই নদীর ওপর যখন ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ছে আর যাত্রী বোঝাই ট্রেনটি যখন ঐ ভাঙ্গা ব্রিজ দিয়ে নদীতে ভেঙ্গে পড়ছে তখনকার বর্ণনা দিয়েছিলেন। বর্ণনা শুনে গায়ের লোম দাড়িয়ে পরে। আমার মনে আছে, ঐ হোস্টেলে বিটিভিতে দেখা এই ছবি শেষে একা একা কেঁদে কেঁদে টিভিরুম ছেড়েছিলাম।
০৩. দ্যা ওল্ড ম্যান এন্ড দ্যা সি (১৯৫৮) পরিচালক- জন স্টারজিস, হেনরি কিং, ফ্রেড জিন্নেমান
একটা সময় ছিলো বিটিভিতে মুভি অব দ্যা উইক নামে প্রত্যেক শুক্রবার কি শনিবারে দুপুর বেলা বিদেশী ছবি দেখাইতো। আমার শৈশবের স্মৃতির সাথে মিশে থাকা মুভি অব দ্যা উইক। পড়াশোনার জন্য বাড়ি ছাড়ার পর হোস্টেলের টিভি রুমে একা একা বসে থেকে দেখা মুভিগুলোর একটা। কারণ ঐ বয়সে ওল্ড ম্যান এন্ড দ্যা সি’র মতো ছবি দেখার মানুষ সহপাঠিদের ছিলো না বলে একই দেখতে হইতো। মাসকান্দা টিটিসি’র হোস্টেলের টিভি রুমে এমন আরে বেশ কিছু ছবি আমার ঐ হোস্টেলেই দেখা। তাই এইসব ছবির সাথে ঐ হোস্টেলটাও উল্লেখযোগ্য। ;)
০৪. ছুটির ঘন্টা (১৯৮০), পরিচালক-
আজিজুর রহমান
সিনেমার প্রসঙ্গ আসলে পৃথিবীর সব সিনেমার কথা আমি ভুলে যাইতে পারি। কিন্তু ছুটির ঘন্টার কথা আমি কখনোই ভুলবো না। হইতে পারে এইটা আমার সিনেমা হলে গিয়া দেখা প্রথম ছবি। তবে এই ছবির জন্যই হয়তো অদ্ভুতভাবে সিনেমার সাথে কিছুটা স্বপ্নের সম্পর্কও স্থাপিত হইছে। তাই এই ছবির কথা আমি কখনোই ভুলবোনা। ভোলার মতো নয়।
০৫. দহন (১৯৮৬), পরিচালক-শেখ নিয়ামত আলী
ব্যক্তিগত প্রেমের চেয়ে সমষ্টিগত প্রেমই গল্পে প্রাধান্য পেয়েছে। গল্পে আরো অনেক গুরুপ্তপূর্ণ বিষয় স্থান পেয়েছে বাজেট, মানুষ, রাজনীতি, প্রেম নিয়ে ছবিতে পৃথব বক্তব্য আছে। এইসব এখন আর আমাদের ছবিতে থাকে না। ছবির সবচে উল্লেখযোগ্য যে বিষয় তা এই সমাজের পুরানো পদ্ধতি ভাঙার সংগ্রামের কথা। খোঁজা হইছে মুক্তির পথ। ফ্যাক্টস, ফিকশন, সিম্বল, হিওমার ব্যবহার করে কাহিনীতে সৃষ্টি করেছে একটি দলিলচিত্র। আর ছবিতে আনোয়ার হোসেনের সিনেমাটোগ্রাফিও ছিলো দুর্দান্ত। মেকিংও ভালো লাগার মতো।
সিনেমার প্রসঙ্গ আসলে পৃথিবীর সব সিনেমার কথা আমি ভুলে যাইতে পারি। কিন্তু ছুটির ঘন্টার কথা আমি কখনোই ভুলবো না। হইতে পারে এইটা আমার সিনেমা হলে গিয়া দেখা প্রথম ছবি। তবে এই ছবির জন্যই হয়তো অদ্ভুতভাবে সিনেমার সাথে কিছুটা স্বপ্নের সম্পর্কও স্থাপিত হইছে। তাই এই ছবির কথা আমি কখনোই ভুলবোনা। ভোলার মতো নয়।
০৫. দহন (১৯৮৬), পরিচালক-শেখ নিয়ামত আলী
ব্যক্তিগত প্রেমের চেয়ে সমষ্টিগত প্রেমই গল্পে প্রাধান্য পেয়েছে। গল্পে আরো অনেক গুরুপ্তপূর্ণ বিষয় স্থান পেয়েছে বাজেট, মানুষ, রাজনীতি, প্রেম নিয়ে ছবিতে পৃথব বক্তব্য আছে। এইসব এখন আর আমাদের ছবিতে থাকে না। ছবির সবচে উল্লেখযোগ্য যে বিষয় তা এই সমাজের পুরানো পদ্ধতি ভাঙার সংগ্রামের কথা। খোঁজা হইছে মুক্তির পথ। ফ্যাক্টস, ফিকশন, সিম্বল, হিওমার ব্যবহার করে কাহিনীতে সৃষ্টি করেছে একটি দলিলচিত্র। আর ছবিতে আনোয়ার হোসেনের সিনেমাটোগ্রাফিও ছিলো দুর্দান্ত। মেকিংও ভালো লাগার মতো।
০৬. ড্রিমস (১৯৯০), পরিচালক- আকিরা কুরোশাওয়া ও ইশিরো হোন্ডা
হ্যা, এই ছবি দেখার পর আমি তব্দা খাইয়া গেছিলাম। কুরোশাওয়ার কিছু ছবি দেখে তাকে বড় ডিরেক্টর হিসেবে স্বীকৃতি মানতে আমার দ্বিধা ছিলো না। কিন্তু ড্রিমস দেখার পর মনে হইছিলো কুরোশাওয়া পৃথিবীর সেরা পরিচালকদের একজন। এমনকি সে কেবল ডিরেক্টরই না, সিনেমার কবিও। বিশেষ করে ভ্যান ঘগ নিয়া পার্টটা দেখার পর আমি কোনও ভাষাই পাইতেছিলাম না, কি দেখলাম। অদ্ভুত। এই মুগ্ধতা প্রকাশ করার আমি কোনও যৌক্তিক ভাষা পাই নাই।
হ্যা, এই ছবি দেখার পর আমি তব্দা খাইয়া গেছিলাম। কুরোশাওয়ার কিছু ছবি দেখে তাকে বড় ডিরেক্টর হিসেবে স্বীকৃতি মানতে আমার দ্বিধা ছিলো না। কিন্তু ড্রিমস দেখার পর মনে হইছিলো কুরোশাওয়া পৃথিবীর সেরা পরিচালকদের একজন। এমনকি সে কেবল ডিরেক্টরই না, সিনেমার কবিও। বিশেষ করে ভ্যান ঘগ নিয়া পার্টটা দেখার পর আমি কোনও ভাষাই পাইতেছিলাম না, কি দেখলাম। অদ্ভুত। এই মুগ্ধতা প্রকাশ করার আমি কোনও যৌক্তিক ভাষা পাই নাই।
০৭. জুড (১৯৯৬), পরিচালক-
মাইকেল উইন্টারবটম
থমাস হার্ডির উপন্যাস জুড দ্যা অবসকিউর অবলম্বনে মাইকেল উইন্টারবটমের সিনেমা জুড। প্রিয় নায়িকা কেট উইনসেøট এর ছবি খুঁজতে গিয়া এই ছবি আমার হাতে পড়ছিলো। ছবির শুরুটা দেখলে যে কোনও সিনেমা প্রিয় ব্যক্তি মুগ্ধ হবে। একদম কবিতার মতো। সিনেমার পর্দাজুড়ে একটা বিষাদ মাখা আহব নিয়ে শুরু হয় যেমন, তেমন শেষও হয় একটা বিষাদ ছুঁয়ে দিয়ে। সর্বোপরি সিনেমার নায়ক জুড আমার প্রিয় চরিত্র হয়ে উঠছিলো ছবি দেখার পর। তার চরিত্রের বেখেয়াল আমার ভালো লাগে। তাই তাকে ভালোবাসি।
থমাস হার্ডির উপন্যাস জুড দ্যা অবসকিউর অবলম্বনে মাইকেল উইন্টারবটমের সিনেমা জুড। প্রিয় নায়িকা কেট উইনসেøট এর ছবি খুঁজতে গিয়া এই ছবি আমার হাতে পড়ছিলো। ছবির শুরুটা দেখলে যে কোনও সিনেমা প্রিয় ব্যক্তি মুগ্ধ হবে। একদম কবিতার মতো। সিনেমার পর্দাজুড়ে একটা বিষাদ মাখা আহব নিয়ে শুরু হয় যেমন, তেমন শেষও হয় একটা বিষাদ ছুঁয়ে দিয়ে। সর্বোপরি সিনেমার নায়ক জুড আমার প্রিয় চরিত্র হয়ে উঠছিলো ছবি দেখার পর। তার চরিত্রের বেখেয়াল আমার ভালো লাগে। তাই তাকে ভালোবাসি।
০৮. চরাচর (১৯৯৩), পরিচালক-
বুদ্ধদেব দাসগুপ্ত
মাথার ভেতর পাখিগাছ নিয়ে ঘুমায়েছে নেতাই (নিতাই)- এই এক সংলাপ আমাকে এলোমেলো করে দিছে বুদ্ধদেব এর এই ছবি দেখার পর। বুদ্ধদেব এর ছবি আদতে ভিস্যুয়াল কবিতা। তাই কবিতা নিয়া বেশী কিছু বলা উচিত হবে না। বলতে হয়, বুদ্ধদেব এর ছবি না দেখলে বাংলা সিনেমা দেখাই অসম্পূর্ণ থাকবে আপনার।
মাথার ভেতর পাখিগাছ নিয়ে ঘুমায়েছে নেতাই (নিতাই)- এই এক সংলাপ আমাকে এলোমেলো করে দিছে বুদ্ধদেব এর এই ছবি দেখার পর। বুদ্ধদেব এর ছবি আদতে ভিস্যুয়াল কবিতা। তাই কবিতা নিয়া বেশী কিছু বলা উচিত হবে না। বলতে হয়, বুদ্ধদেব এর ছবি না দেখলে বাংলা সিনেমা দেখাই অসম্পূর্ণ থাকবে আপনার।
০৯. কালার অব প্যারাডাইস (১৯৯৯), পরিচালক-
মাজিদ মাজিদী
একটা অন্ধ শিশুর পৃথিবী কতটুকুই বা রঙিন হতে পারে বা তার জগৎ কতটুকু বড় এই প্রশ্ন অবান্তর। কিন্তু আমার কথা সম্পূর্ণই ভুল প্রমাণিত করে দিয়েছে মাজিদ মাজিদী’র এই ছবি। যারা দেখেছে তারা কেউই এই কথা অস্বীকার করতে পারবে না বলেই আমার মনে হয়। এই ছবি ইরানের সিনেমায়ই নয়, বিশ্ব চলচ্চিত্রেরও এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাই ছবি প্রসঙ্গে আর কিছু না বললেও চলে।
একটা অন্ধ শিশুর পৃথিবী কতটুকুই বা রঙিন হতে পারে বা তার জগৎ কতটুকু বড় এই প্রশ্ন অবান্তর। কিন্তু আমার কথা সম্পূর্ণই ভুল প্রমাণিত করে দিয়েছে মাজিদ মাজিদী’র এই ছবি। যারা দেখেছে তারা কেউই এই কথা অস্বীকার করতে পারবে না বলেই আমার মনে হয়। এই ছবি ইরানের সিনেমায়ই নয়, বিশ্ব চলচ্চিত্রেরও এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাই ছবি প্রসঙ্গে আর কিছু না বললেও চলে।
১০. নো ম্যানস ল্যান্ড (২০০১), পরিচালক-
ডেনিস টানোভিচ
সাবেক যোগেস্লাভিয়ার ও বর্তমান বসনিয়ান পরিচালক ডেনিস টানোভিচ যুদ্ধ নিয়ে দুর্ধর্ষ যে ছবিটা বানাইছে তার নাম নো ম্যানস ল্যান্ড। নো ম্যানস ল্যান্ড শব্দটা শুনলেই যুদ্ধের যে প্রসঙ্গটা আসে এইটা এমনই প্রসঙ্গের ছবি। আর দুই দেশের শত্রুপক্ষের দুইজন এই নো ম্যানস ল্যান্ডে এসে নিজেদের প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে বন্ধু হয়ে যাওয়ার গল্পই এই ছবিকে উপভোগ্য করেছে। অথচ যুদ্ধই ছবির প্রধান বিষয়। বলতে গেলে আধুনিক সময়ের বিশ্ব রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের এক সর্বোচ্চ সিনেমাটিক দলিল নো ম্যানস ল্যান্ড।
সাবেক যোগেস্লাভিয়ার ও বর্তমান বসনিয়ান পরিচালক ডেনিস টানোভিচ যুদ্ধ নিয়ে দুর্ধর্ষ যে ছবিটা বানাইছে তার নাম নো ম্যানস ল্যান্ড। নো ম্যানস ল্যান্ড শব্দটা শুনলেই যুদ্ধের যে প্রসঙ্গটা আসে এইটা এমনই প্রসঙ্গের ছবি। আর দুই দেশের শত্রুপক্ষের দুইজন এই নো ম্যানস ল্যান্ডে এসে নিজেদের প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে বন্ধু হয়ে যাওয়ার গল্পই এই ছবিকে উপভোগ্য করেছে। অথচ যুদ্ধই ছবির প্রধান বিষয়। বলতে গেলে আধুনিক সময়ের বিশ্ব রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের এক সর্বোচ্চ সিনেমাটিক দলিল নো ম্যানস ল্যান্ড।
১১. মাটির ময়না (২০০২), পরিচালক-
তারেক মাসুদ
আমি বাংলা ছবি দেখতে সবচে বেশী ভালোবাসি। আর বাংলা ছবি যদি তুলনামূলক একটু ভালো হয়, এতেই মুগ্ধ হয়ে যাই আমি। এই ছবি একটু ভালো ছবি না, এই কথা আর আমাকে বলার প্রয়োজন নাই। তবে হ্যা, দীর্ঘ সময় (১৯৯৮ থেকে ২০০২) সিনেমা হলে গিয়া এলোমেলো বাংলা সিনেমা দেখতে দেখতে যখন বিরক্তির মাত্রা ছাড়িয়ে যাইতেছিলো তখনই মাটির ময়না দেখার সুযোগ আসে। আর দেখার পর মনে ১৯৯৮ এ দেখা রিভার কাওয়াই ও ওল্ড ম্যান এন্ড সি দেখার পর মনে হইছিলো আবার সিনেমার আশ্চর্য জগতের কাছাকাছি ফিরতে পারছি। এইটা বিরাট পাওয়া ছিলো আমার কাছে।
১২. সিটি অব গড (২০০২), ফার্নান্দো মিরাল্যাস ও কাতিয়া ল্যুনড
বিশ্ব সিনেমায় ব্রাজিলের সিনেমার আলাদা ইতিহাস তৈরি করছে সিটি অব গড। নতুন সিনেমা দেখবো আর সিটি অব গড দেখবো না এমন বোকা হওয়ার যোগ্যতা আমার নাই। ফুটবলের দেশ বলে পরিচিত ব্রাজিলের যে অন্য রূপ তা আমাদের কাছে তো এই সিনেমাই চিনাইয়া দিছে। মজার বিষয় এই সিনেমা কিন্তু সত্য ঘটনা অবলম্বনেই বানানো। তাই শুধুমাত্র একটি সিনেমা না সিটি অব গড। এই ছবির পর থেকে ফার্নান্দো মিরাল্যাস প্রিয় পরিচালকদেরও একজন।
আমি বাংলা ছবি দেখতে সবচে বেশী ভালোবাসি। আর বাংলা ছবি যদি তুলনামূলক একটু ভালো হয়, এতেই মুগ্ধ হয়ে যাই আমি। এই ছবি একটু ভালো ছবি না, এই কথা আর আমাকে বলার প্রয়োজন নাই। তবে হ্যা, দীর্ঘ সময় (১৯৯৮ থেকে ২০০২) সিনেমা হলে গিয়া এলোমেলো বাংলা সিনেমা দেখতে দেখতে যখন বিরক্তির মাত্রা ছাড়িয়ে যাইতেছিলো তখনই মাটির ময়না দেখার সুযোগ আসে। আর দেখার পর মনে ১৯৯৮ এ দেখা রিভার কাওয়াই ও ওল্ড ম্যান এন্ড সি দেখার পর মনে হইছিলো আবার সিনেমার আশ্চর্য জগতের কাছাকাছি ফিরতে পারছি। এইটা বিরাট পাওয়া ছিলো আমার কাছে।
১২. সিটি অব গড (২০০২), ফার্নান্দো মিরাল্যাস ও কাতিয়া ল্যুনড
বিশ্ব সিনেমায় ব্রাজিলের সিনেমার আলাদা ইতিহাস তৈরি করছে সিটি অব গড। নতুন সিনেমা দেখবো আর সিটি অব গড দেখবো না এমন বোকা হওয়ার যোগ্যতা আমার নাই। ফুটবলের দেশ বলে পরিচিত ব্রাজিলের যে অন্য রূপ তা আমাদের কাছে তো এই সিনেমাই চিনাইয়া দিছে। মজার বিষয় এই সিনেমা কিন্তু সত্য ঘটনা অবলম্বনেই বানানো। তাই শুধুমাত্র একটি সিনেমা না সিটি অব গড। এই ছবির পর থেকে ফার্নান্দো মিরাল্যাস প্রিয় পরিচালকদেরও একজন।
১৩. স্প্রিং সামার ফল
উইন্টার এন্ড স্প্রিং (২০০৩), পরিচালক- কিম কি দুক
কোনও কিছুই যে বাস্তবতার ঊর্ধ্বে না, সেটা ধর্মই হোক আর প্রেম অথবা কমিটমেন্টই হোক তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত কিম কি দুক এর এই অসামান্য ছবি। এক ছবি দেখার পর কিমের বাকি সব ছবি দেখার জন্য কেবল অপেক্ষাই করি নাই। পাওয়া মাত্রই হুমড়ি খেয়ে দেখছি। তার জন্য অনন্ত-রে একটা ধন্যবাদ দেয়াই উচিত। সে যদি বাসায় এই ডিভিডিটা না রেখে যেতো তাহলে হয়তো কিম কে আবিষ্কার করতে আরোও সময় লাগতো।
কোনও কিছুই যে বাস্তবতার ঊর্ধ্বে না, সেটা ধর্মই হোক আর প্রেম অথবা কমিটমেন্টই হোক তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত কিম কি দুক এর এই অসামান্য ছবি। এক ছবি দেখার পর কিমের বাকি সব ছবি দেখার জন্য কেবল অপেক্ষাই করি নাই। পাওয়া মাত্রই হুমড়ি খেয়ে দেখছি। তার জন্য অনন্ত-রে একটা ধন্যবাদ দেয়াই উচিত। সে যদি বাসায় এই ডিভিডিটা না রেখে যেতো তাহলে হয়তো কিম কে আবিষ্কার করতে আরোও সময় লাগতো।
১৪. টার্টলেস ক্যান ফ্লাই (২০০৪), পরিচালক- বাগমান গোবাদি
আবারো যুদ্ধ প্রসঙ্গ। এবারো মানবিক। তবে এবার যুদ্ধে শিশুদের অবস্থান আর তাদের সংগ্রামের গল্প এই গোবাদির এই ছবি। দেখার আগে ভাবিনি এতটা ভালো লাগবে। তবে দেখার পর মুগ্ধ হয়েছিলাম। কালে কালে পৃথিবীর সব যুদ্ধে শিশুরাই যে সবচে ক্ষতিগ্রস্থ হয় তা আর বলতে হয় না। তবে শিশুদেরও জীবনেও যে এঁকে দেয়া হয় আর এই যন্ত্রণা যে তারা বয়ে বেড়ায় বাকি জীবন তা নিঃসন্দেহে বেদনার।
১৫. বর্ন ইন ব্রোথেল : ক্যালকাট্টাস
রেড লাইট কিডস (২০০৪), পরিচালক- জানা ব্রিসকি ও রস কৌফমান
বলা হয় ভারত-বাংলাদেশসহ সাউথ এশিয়া ডকুমেন্টারির জন্য সর্বোৎকৃষ্ট স্থান। তাই এখানেই নির্মিত এই সিনেমা। কলকাতার পতিতালয়ে জন্ম ও বেড়ে ওঠা শিশুদের নিয়ে নির্মিত ডকুমেন্টারি। ডকুমেন্টারি শাখায় অস্কার পাইছিলো। আর কোনও কিছু বলার নাই এই ছবি নিয়া।
১৬. ভিভা কুবা (২০০৫), পরিচালক- জোয়ান কার্লোস ক্রিমাতা ও ইরাইদা মেলবার্তি
কিউবার জীবনযাপনের কিছুই বলতে আমাদের জানা নাই। কারণ আমরা ইন্টারনেটের যে জগৎটায় বাস করি তা পশ্চিমা বিশ্বের হাত দিয়া পরিচালিত আর তারা কিউবারে পছন্দ করে না। দেশটাকে যতটা খারাপ ভাবে দেখানো যায় ততটাই তারা দেখায়। তবে কিউবার সিনেমার অসাধারণ একটা ঐতিহ্য আছে। সেই ঐতিহ্যের কথা চিন্তা করেই খুঁজে খুঁজে কিউবার কিছু ছবি দেখতে শুরু করছিলাম। তার মাঝে ভিভা কুবা’ই সেরা। প্রতিবেশী দুই শিশুর গল্প, দুই বন্ধুর গল্পও। না দেখলে মিস।
১৭. ওয়াটার (২০০৫), পরিচালক- দীপা মেহতা
সতিদাহ প্রথা উচ্ছেদ হওয়ার পরও সনাতন ধর্মাবলম্বী বিধবা নারীদের সমাজে যে কোনও গুরুত্বই ছিলো না, তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত দীপা মেহতার ছবি ওয়াটার। ছবি দেখে ঐ সময়কার হিন্দু বিধবাদের জন্য মায়া হয় নি, ঐ সময়কার সমাজ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে চরম ঘৃণা তৈরি হইছিলো। ছবিতে শ্রীলংকান শিশু অভিনয় শিল্পী সরলার অভিনয় মুগ্ধ করছিলো আমারে।
বলা হয় ভারত-বাংলাদেশসহ সাউথ এশিয়া ডকুমেন্টারির জন্য সর্বোৎকৃষ্ট স্থান। তাই এখানেই নির্মিত এই সিনেমা। কলকাতার পতিতালয়ে জন্ম ও বেড়ে ওঠা শিশুদের নিয়ে নির্মিত ডকুমেন্টারি। ডকুমেন্টারি শাখায় অস্কার পাইছিলো। আর কোনও কিছু বলার নাই এই ছবি নিয়া।
১৬. ভিভা কুবা (২০০৫), পরিচালক- জোয়ান কার্লোস ক্রিমাতা ও ইরাইদা মেলবার্তি
কিউবার জীবনযাপনের কিছুই বলতে আমাদের জানা নাই। কারণ আমরা ইন্টারনেটের যে জগৎটায় বাস করি তা পশ্চিমা বিশ্বের হাত দিয়া পরিচালিত আর তারা কিউবারে পছন্দ করে না। দেশটাকে যতটা খারাপ ভাবে দেখানো যায় ততটাই তারা দেখায়। তবে কিউবার সিনেমার অসাধারণ একটা ঐতিহ্য আছে। সেই ঐতিহ্যের কথা চিন্তা করেই খুঁজে খুঁজে কিউবার কিছু ছবি দেখতে শুরু করছিলাম। তার মাঝে ভিভা কুবা’ই সেরা। প্রতিবেশী দুই শিশুর গল্প, দুই বন্ধুর গল্পও। না দেখলে মিস।
১৭. ওয়াটার (২০০৫), পরিচালক- দীপা মেহতা
সতিদাহ প্রথা উচ্ছেদ হওয়ার পরও সনাতন ধর্মাবলম্বী বিধবা নারীদের সমাজে যে কোনও গুরুত্বই ছিলো না, তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত দীপা মেহতার ছবি ওয়াটার। ছবি দেখে ঐ সময়কার হিন্দু বিধবাদের জন্য মায়া হয় নি, ঐ সময়কার সমাজ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে চরম ঘৃণা তৈরি হইছিলো। ছবিতে শ্রীলংকান শিশু অভিনয় শিল্পী সরলার অভিনয় মুগ্ধ করছিলো আমারে।
১৮. বাবেল (২০০৬), পরিচালক-
আলেজান্দ্রো গঞ্জালেস ইনারিতু
ইনারিতু যখন বিজ্ঞাপন বানানো বাদ দিয়া সিনেমা বানাইতে আসে, শুরুতেই সে বিশ্ববাসীকে চমক দেখায় তার এ্যামোরেস পেরোস দিয়া। কিন্তু আমি এ্যামোরেস পেরোসের চেয়ে বাবেল কে এগিয়ে রাখবো। কারণ, বাবল কেবল একটা সিনেমা না আমার কাছে। আমার কাছে এইটা একটা বিশ্ব রাজনীতি অর্থনীতির অবস্থার বিপক্ষে তীব্র আন্দোলনেরও নাম। এই ছবি ভালো না লেগে উপায় আছে!
ইনারিতু যখন বিজ্ঞাপন বানানো বাদ দিয়া সিনেমা বানাইতে আসে, শুরুতেই সে বিশ্ববাসীকে চমক দেখায় তার এ্যামোরেস পেরোস দিয়া। কিন্তু আমি এ্যামোরেস পেরোসের চেয়ে বাবেল কে এগিয়ে রাখবো। কারণ, বাবল কেবল একটা সিনেমা না আমার কাছে। আমার কাছে এইটা একটা বিশ্ব রাজনীতি অর্থনীতির অবস্থার বিপক্ষে তীব্র আন্দোলনেরও নাম। এই ছবি ভালো না লেগে উপায় আছে!
ইনারিতুর মতো টারসেমও বিজ্ঞাপন নির্মাতা। ফলে তার সিনেমায় বিজ্ঞাপনী একটা ভাষা থাকে। কিন্তু কল্পনার যে রংধনু সাত রঙের না, সেটা শত কোটি রঙেরও হতে পারে তা অসাধারণ ভাবে দেখাইছে টারসেম সিং। ইন্ডিয়ান বংশদ্ভুত কোনও পরিচালক হলিউড বা বলিউড কোথাও এত দুর্দান্ত কাজ করতে পারে নি বলে মনে হয়।
২০. ইনটু দ্যা ওয়াইল্ড (২০০৭), পরিচালক- শন পেন
ক্রিস্টোফার ম্যাকেন্ডলস এর বায়োগ্রাফি অবলম্বন করে জন ক্রাকোয়ের বই ইনটু দ্যা ওয়াইল্ড থেকে ছবি বানাইছে ইনটু দ্যা ওয়াইল্ড। বিভুতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর বাংলা উপন্যাস চাঁদের পাহাড়ের কথা যদি আমাদের মনে থাকে তবে তার শঙ্কর চরিত্রটার ইউরোপিয়ান ভার্সন এই ছবির চরিত্র ক্রিস্টোফার। উপন্যাস বলেই শঙ্কর আফ্রিকা থেকে বেঁচে ফিরতে পেরেছিলো, কিন্তু ক্রিস্টোফার নিজের জীবন দিয়ে প্রমাণ দিয়েছে মনের স্বাধীনতাই আসল। আর সেই স্বাধীনতাটাই আমাদের নেই। বলতে গেলে আমরা পরাধিন। তাকেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে ক্রিস্টোফার আর শন পেন।
২১. লেমন ট্রি (২০০৮), পরিচালক- ইরান রিকিলিস
ইসরাইলি পরিচালকরা ভালো সিনেমা বানায়। এবং নিঃসন্দেহে তাদের সিনেমার সিংহভাগই যায় প্যালেস্টাইনিদের পক্ষে। প্যালেস্টাইনিদের জীবন সংগ্রাম ইসরাইলিদের ছবির বিষয় হয়ে বারবার রূপালী পর্দায়। এই রকম জীবনচিত্রের মাঝে লেমন ট্রি যুদ্ধের বাইরে আর এক যুদ্ধের গল্প। এই গল্প বারবার আমাদের মতো ছেলেদের যারা মাকে ছেড়ে নিজের মতো থাকে তাদের ব্যার্থতার কথাও খুবই দৃঢ়ভাবে বলছে ইরান রিকিলিস।
২২. মিডনাইট ইন প্যারিস (২০১১), পরিচালক- উডি অ্যালেন
পৃথিবীর সমস্ত শিল্পীদের নাকি দুইটা মাতৃভূমি একটা তার জন্ম দেশ আর একটা প্যারিস। শিল্পের শহর প্যারিসে ব্রিটিশ এক গল্পকারের ভ্রমণটা তাই অনেকটা ইতিহাস আর কল্পনায় মাখামাখি। বাস্তব আর কল্পনার মাঝে বিস্তর ফারাক থাকলেও এই ছবিতে কিন্তু ইতিহাসকে বাস্তবে টেনে আনতে মোটেও কষ্ট পায় নি অ্যালেন। এই কারণেই সে বিশ্বসেরা পরিচালকদের একজন।
0 মন্তব্য(গুলি):