শনিবার, ১৩ জুন, ২০১৫

বন্ধুর খোলা জানালায় কতকাল আর দেখবো আকাশ?
প্রশ্ন করি নিজের কাছে। উত্তর মেলে না। দেখি গোধূলির লাল একটা আকাশের বাতাস আমার ঘরের চারপাশ দিয়া ঘুইরা যায়। ধরা দেয় না। কী করে যে ঐ সোনালি বাতাসটারে কুরিয়ার করি, পাই না তারও দিশা। ঝিম ধরানো একটা গানের কথা বারবার কানে কানে এসে বলে যায় বিকেল বেলা যে লাল শাড়িটা পড়ছো তার গায়ে লেপ্টে আছে সমস্ত প্রেম আর কামের বাতাস। তবুও ভুলপথে কেন আমার জানালার দিকে ফিরে ফিরে আসে একটা লু হাওয়া? পাখিদের কাছে এর চেয়েও বড় কোনও অতীতের কথা লিখে রেখে আমিতো ভুল পথের জাদুকর, অন্ধকারেই আঁকি বাতাসের নীরবতার ছবি। জানি এইসব মায়া বিভ্রাট রাজ্যের রানী তুমি নও, অতিথি মাত্র।
দেয়ালে দেয়ালে লিখি প্রেমের চিঠি, 
তোমার আমার সন্তানের নাম তাই অর্থনীতি
হাওয়ার কানে কানে গেরো দিচ্ছে আশ্চর্য সময়, প্রিয় আহ্বানের নাম ভুলে গিয়ে মনে রাখি অর্থনীতির সূত্র আর সূত্রের ব্যাখ্যা। অথচ আমার জানালাভর্তি ছিলো নিঝুম বনের ঘ্রাণ। প্রতিদিন যে ঘামের গন্ধে জেগে ওঠো, আয়নায়ও কি তোমারই ছায়া নাকি অন্য কোনও কুমির দখলে আছে সুদৃশ্য কাচারিঘর। জানালা-দরজার কথা ভুলে যাও। তাকাও নিজেরই দেয়ালে দেখো সেখানের আয়নায় আমার মুখ দেখতে পাও কি না। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে যদি শিউলির ঘ্রাণ পাও, বুঝবে তোমার শীতল রক্তে এখন আমার উত্তেজনার চোরা স্রোত।
গোপন ঘ্রাণের শৈশব তোমার কাছে ছুটি চেয়েছে কানামাছি খেলা
আমি আর বাবু একটা বৃষ্টিনগর বানিয়েছি। মন চাইলেই আমরা বৃষ্টি নামাই। প্রথম যেদিন অন্তর্গত সেই নগর আবিষ্কার করলাম, আমাদের ভিজিয়ে দিয়ে গেলো শীতসন্ধ্যার পরিযায়ী বৃষ্টি। চুপে চুপে কাশের বনে ভিজে আমরা একটি ঘুমের স্বপ্ন দেখছিলাম। নিশ্চিন্ত ঘুম। ভেসে আসছিলো একটা বর্ণনাময় জীবনের ছবি, যে জীবনের সাতে ও পাঁচে জড়িয়ে থাকবে অজস্র মানুষের সুখ-দুঃখের গল্প। আমাদের মুখোমুখি ছিলো একটা হিংস্র জানোয়ার। সেও ঘুমিয়ে ছিলো রাতদিন হিশেব না করে, জেগে ছিলো তার পশুত্ব।
আমাদের দেয়ালে লেখা প্রাচীন অক্ষরের পাণ্ডুলিপি
আমাদের চেতনার ঘুড়ি দেয়ালে দেয়ালে উড়ে
শেয়ারবাজারে ধস, সর্বস্বান্ত হয়ে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির আত্মহত্যা; ভাইয়ের লাশের উপর দাঁড়িয়ে আমরা গড়ছি দালান। বন্ধু তুমি কি ভুলে গেছো বিশ্বজিতের রক্তের রঙ? আমাদের দেয়ালে তো কেবল খবরই থাকে না, থাকে কিছুটা অনুভূতিও। অথচ অনুভূতির রঙ কেমন তা কি আমরা জানি? আমাদের অনুভূতির সঙ্গে কি তাজরিনে পুড়ে যাওয়া মানুষের আত্মার ভাষা মিলে? মিলে কি রানাপ্লাজায় অঙ্গ হারানো মানুষের অনুভূতি? আমাদের অনুভূতির সঙ্গে কি মিলে রাষ্ট্র ও রাজনীতিবিদদের অনুভূতি? এই জন্যেই কি কাদের মোল্লার রায় মেনে নিতে পারি না। পারি না আগুনে পুড়ে যাওয়া মানুষের কান্না মেনে নিতে। রাষ্ট্রযন্ত্র কী করে পারে?
রাষ্ট্রযন্ত্র একটা ভূতে খাওয়া বাড়ি
তার সঙ্গে কথা নেই আর, জন্মের আড়ি
রাষ্ট্রের অসুখ হলে তুমি আমি এক সুরে কাঁদি। জানি তার দুঃখের ভাষা। প্রতিদিন যমের কাছ থেকে ফিরে আসুক একগুচ্ছ শিউলির তাজা ঘ্রাণ নিয়ে– এই স্বপ্ন নিয়ে ঘুমাতে যাও তুমি। অথচ তোমার সকাল জুড়ে মানুষের মাংস পোড়া ঘ্রাণ,আর পোড়া রক্তের সুস্বাদু জেলি। আমি কতকাল ঘুমাতে পারি না। রাত ভর জেগে থাকি,অপেক্ষা করি গভীর ঘুমের। প্রিয় ঘুমের রাত্রি তুমি কবে আসবে?

প্রিয় ঘুমের রাত্রি তুমি কবে আসবে

at শনিবার, জুন ১৩, ২০১৫  |  No comments

বন্ধুর খোলা জানালায় কতকাল আর দেখবো আকাশ?
প্রশ্ন করি নিজের কাছে। উত্তর মেলে না। দেখি গোধূলির লাল একটা আকাশের বাতাস আমার ঘরের চারপাশ দিয়া ঘুইরা যায়। ধরা দেয় না। কী করে যে ঐ সোনালি বাতাসটারে কুরিয়ার করি, পাই না তারও দিশা। ঝিম ধরানো একটা গানের কথা বারবার কানে কানে এসে বলে যায় বিকেল বেলা যে লাল শাড়িটা পড়ছো তার গায়ে লেপ্টে আছে সমস্ত প্রেম আর কামের বাতাস। তবুও ভুলপথে কেন আমার জানালার দিকে ফিরে ফিরে আসে একটা লু হাওয়া? পাখিদের কাছে এর চেয়েও বড় কোনও অতীতের কথা লিখে রেখে আমিতো ভুল পথের জাদুকর, অন্ধকারেই আঁকি বাতাসের নীরবতার ছবি। জানি এইসব মায়া বিভ্রাট রাজ্যের রানী তুমি নও, অতিথি মাত্র।
দেয়ালে দেয়ালে লিখি প্রেমের চিঠি, 
তোমার আমার সন্তানের নাম তাই অর্থনীতি
হাওয়ার কানে কানে গেরো দিচ্ছে আশ্চর্য সময়, প্রিয় আহ্বানের নাম ভুলে গিয়ে মনে রাখি অর্থনীতির সূত্র আর সূত্রের ব্যাখ্যা। অথচ আমার জানালাভর্তি ছিলো নিঝুম বনের ঘ্রাণ। প্রতিদিন যে ঘামের গন্ধে জেগে ওঠো, আয়নায়ও কি তোমারই ছায়া নাকি অন্য কোনও কুমির দখলে আছে সুদৃশ্য কাচারিঘর। জানালা-দরজার কথা ভুলে যাও। তাকাও নিজেরই দেয়ালে দেখো সেখানের আয়নায় আমার মুখ দেখতে পাও কি না। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে যদি শিউলির ঘ্রাণ পাও, বুঝবে তোমার শীতল রক্তে এখন আমার উত্তেজনার চোরা স্রোত।
গোপন ঘ্রাণের শৈশব তোমার কাছে ছুটি চেয়েছে কানামাছি খেলা
আমি আর বাবু একটা বৃষ্টিনগর বানিয়েছি। মন চাইলেই আমরা বৃষ্টি নামাই। প্রথম যেদিন অন্তর্গত সেই নগর আবিষ্কার করলাম, আমাদের ভিজিয়ে দিয়ে গেলো শীতসন্ধ্যার পরিযায়ী বৃষ্টি। চুপে চুপে কাশের বনে ভিজে আমরা একটি ঘুমের স্বপ্ন দেখছিলাম। নিশ্চিন্ত ঘুম। ভেসে আসছিলো একটা বর্ণনাময় জীবনের ছবি, যে জীবনের সাতে ও পাঁচে জড়িয়ে থাকবে অজস্র মানুষের সুখ-দুঃখের গল্প। আমাদের মুখোমুখি ছিলো একটা হিংস্র জানোয়ার। সেও ঘুমিয়ে ছিলো রাতদিন হিশেব না করে, জেগে ছিলো তার পশুত্ব।
আমাদের দেয়ালে লেখা প্রাচীন অক্ষরের পাণ্ডুলিপি
আমাদের চেতনার ঘুড়ি দেয়ালে দেয়ালে উড়ে
শেয়ারবাজারে ধস, সর্বস্বান্ত হয়ে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির আত্মহত্যা; ভাইয়ের লাশের উপর দাঁড়িয়ে আমরা গড়ছি দালান। বন্ধু তুমি কি ভুলে গেছো বিশ্বজিতের রক্তের রঙ? আমাদের দেয়ালে তো কেবল খবরই থাকে না, থাকে কিছুটা অনুভূতিও। অথচ অনুভূতির রঙ কেমন তা কি আমরা জানি? আমাদের অনুভূতির সঙ্গে কি তাজরিনে পুড়ে যাওয়া মানুষের আত্মার ভাষা মিলে? মিলে কি রানাপ্লাজায় অঙ্গ হারানো মানুষের অনুভূতি? আমাদের অনুভূতির সঙ্গে কি মিলে রাষ্ট্র ও রাজনীতিবিদদের অনুভূতি? এই জন্যেই কি কাদের মোল্লার রায় মেনে নিতে পারি না। পারি না আগুনে পুড়ে যাওয়া মানুষের কান্না মেনে নিতে। রাষ্ট্রযন্ত্র কী করে পারে?
রাষ্ট্রযন্ত্র একটা ভূতে খাওয়া বাড়ি
তার সঙ্গে কথা নেই আর, জন্মের আড়ি
রাষ্ট্রের অসুখ হলে তুমি আমি এক সুরে কাঁদি। জানি তার দুঃখের ভাষা। প্রতিদিন যমের কাছ থেকে ফিরে আসুক একগুচ্ছ শিউলির তাজা ঘ্রাণ নিয়ে– এই স্বপ্ন নিয়ে ঘুমাতে যাও তুমি। অথচ তোমার সকাল জুড়ে মানুষের মাংস পোড়া ঘ্রাণ,আর পোড়া রক্তের সুস্বাদু জেলি। আমি কতকাল ঘুমাতে পারি না। রাত ভর জেগে থাকি,অপেক্ষা করি গভীর ঘুমের। প্রিয় ঘুমের রাত্রি তুমি কবে আসবে?

Read More

0 মন্তব্য(গুলি):

এই সাইটের যে কোনও লেখা যে কেউ অনলাইনে ব্যবহার করতে পারবে। তবে লেখকের নাম ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক।

Blogger template Proudly Powered by Blogger. Arranged By: এতক্ষণে অরিন্দম