বাংলাদেশের ভিজ্যুয়াল মিডিয়ায় মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর একটা বেশ ভালো ভূমিকা আছে। এ কথা নিশ্চয়ই কেউ অস্বীকার করবে না। আমিও করি না। আমি বরং এক কাঠি সরেশ হয়ে তাকে একটা ‘বিপ্লবী’র স্থানে দেখতে চাই। আর সেই বিপ্লবটা সেই ক্ষেত্রে, যখন বাংলাদেশের দর্শকরা ইটিভি বাংলা ছাড়া আর হাতে গোনা কয়েকজন টিভি নাট্যনির্দেশকের নাটক ছাড়া আর কিছুই বুঝতো না, তখন তিনি নতুন জানালা খোলে দিয়েছিলেন। তার টিভি নাটক মানুষ এক সময়ের ‘অয়োময়’ ‘সংসপ্তক’ এর মতো নাটক যেভাবে দেখতো ঠিক সেভাবে হয়তো দেখতো না, কিন্তু তার নাটক মানুষ উৎসব সহকারে দেখতো। এখন তিনি আর নাটক বানান না, সিনেমা বানান। একজন নির্মাতার এইটাই চূড়ান্ত পরিচয় ও অবস্থানের স্থান। তার জন্যও তিনি সেলুট পাওয়ার দাবি রাখেন। সেইটুক আমি তাকে দিতে চাই এবং তা আমার মন থেকে তিনি অকুণ্ঠভাবেই পেয়ে থাকেন। তাঁর চতুর্থ পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘টেলিভিশন’। এর আগে তিনি তিন তিনটি ছবি নির্মাণ করেছেন। দর্শক সমালোচকদের কাছে প্রশংসা ও সমালোচনা তিনি দুটোই পেয়েছেন। আমার ব্যক্তিগত অবজারভেশন বলে প্রশংসা পেলে তিনি আহ্লাদে গদগদ হয়ে যান না, খুশী হন (প্রশংসা কে না পছন্দ করে?)। আবার সমালোচনা পেলে তিনি সেটাও যে খুব বিরক্ত হন তা না, তার প্রতিবাদের ভাষা অন্য রকম হয়ে গিয়ে একটা সিনেমাও হয়ে যেতে পারে। যার প্রমাণ আমরা ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’ এর প্রকাশিত ডিভিডিতে দেখেছি।
সে যাই হোক, সমালোচনাকে গ্রহণযোগ্যভাবে দেখতে না পারলে তাকে আমি ততটা গুরুত্ব দিতে রাজি না। যে কাজ করতে তার সমালোচনা হবেই। যদি সমালোচনা গ্রহণ করতে পারেন, তবেই উন্নতি হবে। নইলে যা আছে তাই থাকবে, বরং অবনতিও হতে পারে। এই কথাগুলো বলা এ কারণে যে, সরয়ার ফারুকির তৃতীয় ছবি যখন মুক্তি পায়, তখন প্রয়াত নির্মাতা তারেক মাসুদ বলেছিলেন, দান দান তিন দানে যেমন আমরা সেরাটা প্রত্যাশা করি, সরয়ার এর কাছেও তাই প্রত্যাশা করি। তবে সেই ছবি দেখার পর তারেক মাসুদের প্রতিক্রিয়া কি হয়েছিলো তা আমার জানা নাই। তাই আমি ঠিক এটা বলতে পারছিনা তৃতীয় দানটা কি তিনি পুরনো দানগুলোর লাভ-ক্ষতি পুষিয়ে দিয়েছিলেন কিনা। এইখানে আমার সন্দেহ রয়েছে। কারণ সেই তৃতীয় দান অতিক্রম করে এখন চতুর্থ দান-এ গিয়ে পরেছেন তিনি। একজন চলচ্চিত্রকার যদি তার চতুর্থ ছবিতে এসেও আশ্চর্য রকম কিছু করতে না পারেন, তাহলে সাধারণত ধরে নিয়ে থাকি সেই চলচ্চিত্রকার আর আশ্চর্যরকম কিছু করতে পারবে না। এ কথা সব ক্ষেত্রেই কাজে দেয় বলে ধারণা করি। যদিও ব্যতিক্রম সব সময়ই হিসেবের বাইরে।
এবার আসি মূল প্রসঙ্গে। ‘টেলিভিশন’ ছবিটি প্রথম প্রিমিয়ার হয়েছে ‘পুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-২০১২’ তে। তবুও যেনতেন প্রিমিয়ার নয়, ক্লোজিং ফিল্ম হিসেবে তা প্রিমিয়ার হয়েছে। এই ছবি দেখে আমারও (অন্য অনেকের মতো- সেই দলে এই ছবির নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকিও রয়েছেন) প্রিয় নির্মাতা কিম কি দুক বলেছেন, গুড ফিল্ম। পরবর্তিতে দুবাই আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফ্যাস্টিভ্যালে এ ছবি ‘বিশেষ পুরস্কার’ পেয়েছে। এসব কারণে ‘টেলিভিশন’ ছবি নিয়ে আগ্রহ ছিলো। সেই আগ্রহ মেটাতে শুক্রবার বিকেলেই ছবিটি দেখার মনস্থির করেছিলাম। নানান কারণে তা হলো না। শনিবার সন্ধ্যার টিকিট করে সারারাত সারাদিন এর অপেক্ষায় ছিলাম। সিনেমা শুরুর সময় সিনেমার টাইটেল প্রেজেন্টেশন ভালো লেগেছে। ছবির রিভিউ পড়ার সুবাদে গল্পটি জেনে গিয়েছিলাম আগেই। যা জেনেছি তাতে মনে হৈছে এই ছবির বাংলাদেশী কোনও প্রিমিয়ার হৈলে ছবিটা দর্শকদের কাছ থেকে গ্রহণযোগ্যতা এখন যতটুকু পাচ্ছে তার চেয়ে হয়তো একটু কম পেতো। ছবির গল্প মোটামোটি এই- একজন ধর্মান্ধ চেয়ারম্যান (ধর্মভিরু বলবো না এই কারণে যে, ধর্ম ভিরুরা কখনোই ধর্ম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে না, কেবল নিজে বাঁচার জন্য ধর্মের আশ্রয় নেয়। অপরদিকে ধর্মান্ধরা ধর্মকে ঢাল করে চারপাশে ধর্মের লৌকিক জগত তৈরি করতে চায়। এই ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র আমার ধারণা তাই করেছে। এ কারণেই তিনি ধর্মান্ধ) নিজের গ্রামে টেলিভিশন নিষিদ্ধ করেছে। তার ধারণা টেলিভিশন দেখলেই মানুষ নষ্ট হয়ে যাবে। এই টেলিভিশনের কাছেই তাকে শেষ পর্যন্ত পরাজিত হইতে হয়। মাঝখানে আছে প্রেম, সংগ্রাম, আর কিছুটা ড্রামা। এইসব বিস্তারিত বলার তেমন ইচ্ছাই হইতেছে না। ছবিটা নিয়া যে লিখতে বসছি তার কারণ অন্য। তার কারণ হৈলো এই ছবিটার প্রত্যাশার পারদ এত বেশী উড়ছিলো যে, তেমনি কইরা পারদ গইল্যা কুয়াশা হৈয়া গেছে। ছবির গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ঐ চেয়ারম্যান এতই ধর্মান্ধ যে পাসপোর্ট করতে ছবি তুলতে হবে বলে সে হজ্জ্ব করতে যেতে চায় না। কিন্তু এই ছবির দুই গল্পকার ভুলে যায় চেয়াম্যান নির্বাচন করতে হলে যে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে হয় তাতে প্রার্থীর ছবি দিতেই হবে। না দিলে মনোনয়ন বাতিল। যে গ্রামে টেলিভিশন চলে না সেই গ্রামে ইন্টারনেট চলে। টেলিভিশনের চেয়ে যে ইন্টারনেট নষ্ট হয়ে যাওয়ার জন্য আরও ভয়ঙ্কর তা তো বলার অপেক্ষাই রাখে না। এমন কন্ট্রাডিকশন নিয়ে ছবির গল্প। ছবির প্রথমার্ধে প্রচুর হিউমার। আর এই হিউমারের কারণে প্রথমার্ধে গল্পের চেয়ে আনন্দই বেশী দেয়া বলে মনে হলো। মনে হলো এতই যদি হিউমার আনতে হয় তাহলে কেবল সংলাপ দিয়ে কেনো? নোয়াখালির একটা দ্বীপের মতো অঞ্চল বলেই কি ঐ দ্বীপের মানুষদের কথায় হিউমার বেশী থাকবে? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজবো না। কারণ খুঁজে লাভ নেই। এই উত্তর ছবিতে নেই। এই প্রথম অর্ধের ভেতর সিনেমা দেখতে বসছি এই কথা একবারও মনে হয় নাই, কেবল মনে হৈতেছিলো যে সিনেমা দেখতে আসছি কিন্তু সিনেমাটা কখন শুরু হবে? সেই সিনেমা আর শুরু হয় নাই। মাঝে মাঝে ট্রেলার দেখাইয়া আবার তার নিজের স্থানে ফেরত গেছে। অভিনেতা অভিনেত্রীদের অধিকাংশেরই মুখে নোয়াখালি অঞ্চলের ভাষাটা কেমন যেনো মানানসই লাগছিলো না। মনে হচ্ছিলো তারা নোয়াখালীর ভাষাই বলতেছে তবে মুখস্থ করে। চেয়ারম্যান চরিত্রে শাহির হুদা রুমিকে নির্বাচন আমার মোটেও মনপুত হয় নি। এই গল্প কেনো নোয়াখালির হবে তাও ঠিক ততটা স্পষ্ট না। একটা কারণ হিসেবে দাঁড় করানো যায়, তা হলো ঐ দ্বীপ সাম্রাজ্যের প্রসঙ্গ। কিন্তু সেই প্রসঙ্গ ধূপে টেকে না কারণ, যে এই ক্ষমতাটা দেখাতে পারে সে সবখানেই পারে। যেই গল্পটি এই ছবিতে বলা হয়েছে, সুদূর গ্রামের গল্প যেখানে টেলিভিশন ও মোবাইল ফোনই রীতিমত আন-এভিইলেবল, সেই গল্প বলার জন্য আধুনিক ব্যান্ড শিল্পীদের মিউজিকে করা একেরপর এক গান অন্যদের কেমন লেগেছে তা আমার জানা নাই। ছবিতে ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর খুঁজেই পাই নাই। ছবির সিনেমাটোগ্রাফি আরামদায়ক ছিলো। লাইট চমৎকার, কম্পোজিশনও বেশ ভালো। কিন্তু বারবার যে জিনিসটি মিস করতেছিলাম তা হৈলো ঐ সিনেমা সিনেমা ভাব। আজকে যখন অফিসে কথা হচ্ছিলো টেলিভিশন নিয়ে, তখন একজন বললো তার মেয়ে ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’ সিনেমা দেখার পর নাকি বলছিলো টেলিফিল্ম দেখতেছে। আমি একটা জায়গা ভেবে প্রতিবাদ করি নি। কারণ, টিভির নির্মাতারা সিনেমা বানাতে গেলে তারা টিভির যে চর্চা, ঐ চর্চার মতো করেই সিনেমা বানাতে চায়। আর এ কারণেই সিনেমা দেখার পরও তা টিভি প্রোডাকশন বলে মনে হয়। এই ছবি দেখার পরও আমার তাই মনে হচ্ছিলো। আমি সেই মোস্তফা সরয়ার ফারুকী কেই দেখছি যিনি ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’ ছবির পরিচালক। কিছুটা মুন্সিয়ানা এখানেও দেখিয়েছেন সেটা ঐ প্রত্যাশার পারদ যে উঁচুতে উঠছিলো তা মেটায় নাই। কিছু কিছু আশ্চর্য রকম চিত্রকল্প কিছু কিছু বিরক্তিকর দৃশ্যায়নের সাথে প্লাসে মাইনাসে ছবিটার অনেক ক্ষেত্রেই যোগফল রাখতে সাহস পায় না। তবে ছবির বেশ কিছু জায়গা চোখে লেগে থাকবে তার একটি হলো কুহিনূরের (তিশা) সাথে সোলাইমানের (চঞ্চল) ফোনে কথা বলার দৃশ্য। ফোনটি কোনও এক জায়গায় রেখে দাও, যেন আমি তোমার হাটা চলার শব্দ শুনতে পাই আর মনের ‘টেলিভিশন’ দিয়ে দেখতে পাই তোমারে। অসাধারণ সরয়ার ভাই। আপনি যে পারেন এই দৃশ্যে আপনি তা দেখিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু আপনি বলুনতো, এই দৃশ্যটা যে সিনেমায় থাকে সেই সিনেমাটার অন্যসবকিছু এর আশ-পাশের মানেরও হয়েছে? আমি জানি না। এছাড়া ছবির শেষে যখন আমিন চেয়ারম্যান প্রতারিত হয়ে হোটেলে মাস কাটিয়ে হজ্জ্বের কথা বলে বাড়ি আসবে বলে চিন্তা করে। বা অপেক্ষা করে হজ্জ্ব করে তবেই বাড়ি যাবে, তার যে পরাজয় এই পরাজয় কি কাম্য? এই পরাজয় কি তাকে মাটিতে মিশিয়ে দেয় না? সেই পরাজয়ের গল্প তো তার গ্রামেই সবচেয়ে বেশী অনুভূতিপ্রবণ হতে পারতো। অন্তত আমার তাই মনে হয়। অথবা আমিন চেয়ারম্যানের যে হজ্জ্বের জন্য হাহাকার, তা যত দীর্ঘ সময় দেখানো হয়েছে, এতে করে কি হাহাকার খুব তীব্র বোঝা যায়? আমি বুঝি নি। ছবির অনেক ক্ষেত্রেই মনে হয়েছে আপনি ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর ইচ্ছা করেই এড়িয়ে গেছেন। এই এড়িয়ে যাওয়াকে কি আপনার অন্য কোনও পরিকল্পনা কাজ করেছে? এই পরিকল্পনার কারণে কিন্তু অনেক ভালো ইমোশন ক্রিয়েট করার সুযোগ তৈরি হয়েও হয় নি। তা কি ভালো হলো? এত এত প্রশ্নের উত্তর আমি পাই নি। মনে হয় পাবোও না।
তারপরও ছবিটা হয়তো দেশের বাইরের আরও কিছু ফ্যাস্টিভ্যালে যাবে, কিছু পুরস্কারও পাবে। তবে এ প্রসঙ্গে কিছু না বললেই নয়। তা হলো আমাদের ছবি নিয়ে বড় বড় ফ্যাস্টিভ্যাল কমিটির যে দৃষ্টিভঙ্গিটা থাকে তা হলো, বাংলাদেশ একটা উন্নয়নশীল দেশ, এই দেশের উন্নয়নশীল ছবির জন্য আমরা না হয় একটু সহযোগীতা করলামই। এই দৃষ্টিভঙ্গির পাশাপাশি আমাদের গল্প ও নিজেদের বিক্রয় করবার যা থাকে তা হলো তাদের মনোযোগ আকর্ষণের ভাবনাগুলো। এই ছবিতে তা করা হয়েছে বলেই মনে হয়েছে আমার। যেই অভিযোগটা তারেক মাসুদকে নিয়েও কেউ কেউ করেছিলো। তার নামে অভিযোগ ছিলো, তারেক মাসুদ ইউরুপের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ছবি বানায়, এ কারণে সেই ছবি সেইসব ফ্যাস্টিভ্যালে প্রশংসিত হয়। এই অভিযোগ পুরুপুরি সত্য না হলেও কিছুটা তার সাথে যায়। যদিও তিনি তা অতিক্রম করেও দেখিয়েছেন। কিন্তু এই ছবিতেও তো একই ভাবনার প্রমাণ পাই। নয়তো ‘টেলিভিশন’ এর গল্প বলতে গিয়ে ধর্মীয় একটি চরিত্রই কেনো শিকার হবে তার?
purota samuTe likhleI bhalo korTen karon Okhane monttobbo kra zeto.
উত্তরমুছুনধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। সামুতে দিলে বেশী পাঠক পড়তো এটা স্বীকার করি। কিন্তু আমি বাইরে লিখে খুব স্বস্তি পাই না। তাই আমার ব্লগটিকে একটু পরিচিত করার জন্য এই পদ্ধতি বেছে নিয়েছি। কষ্ট দেয়ার জন্য দুঃখিত।
মুছুনইলিয়াস কমল ভাই, বরাবরের মতো ভালো লেখা।
উত্তরমুছুনচমৎকার পর্যবেক্ষণ।
ভালো না লাগলেও ধর্মের মত বিক্রয়যোগ্য জিনিস আমাদের আর একটাও নাই।
যে প্রশ্নগুলো তুলছেন সেগুলা নিয়া ভাবছি।
ধন্যবাদ সুজন ভাই। আপনার সাথে বিস্তারিত কথা বলার আগ্রহ থাকলো।
মুছুনভালো লিখেছেন কমল ভাই। শব্দের প্রয়োগটা আপনার নিজস্ব জানি, কিন্তু পুরোটাই একরকম হলে বোধহয় বেশী ভালো লাগত।
উত্তরমুছুনআর ধর্মান্ধ বিষয়ে আমার একটু দ্বিমত আছে। সে কেন টেলিভিশন ঢুকতে দিচ্ছে না তার একটা ব্যাখ্যা সে মসজিদের ইমামের কাছে দিয়েছে। সে যে তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সেটাই বাস্তব ছিল ত্রিশ বছর আগেও। তখন কিন্তু এটা ধর্মান্ধতা ছিল না, ইনফ্যাক্ট এখনো ধর্মান্ধতা বলা যাবে কিনা ভাবা উচিত। চেয়ারম্যান তার আশেপাশের প্রয়োজনকে অস্বীকার করছে বটে, কিন্তু সে সিদ্ধান্ত গ্রহনেও সাহস করতে পারছে না - এইজন্যই সে মসজিদে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করছে। এর বাইরে, যেহেতু এই ঘটনাটা বাস্তব ছিল বিশ থেকে ত্রিশ বছর আগে, এবং পরিস্থিতির অনেক পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার পরও একই ঘটনা বর্তমানে উপস্থাপন করার ফলে 'ধর্মান্ধতা' বেশীমাত্রায় ফুটে উঠেছে। এসকল কারণে তাকে ধর্মান্ধ বলার চেয়ে ধর্মভীরু বলতে বেশী স্বচ্ছন্দ বোধ করি।
আরেকটা অনুরোধ। আমরা বোধহয় সিনেমা সম্পর্কে যে কোন লেখায় একটা রেটিং শুরু করতে পারি। এই রেটিং ৫ এর ভিত্তিতে হলে বেশী ভালো হয়। যদি একমত হন, তবে এই পোস্টে একটা রেটিং দিতে পারেন।
ভালো থাকবেন কমল ভাই :)
ধন্যবাদ দারাশিকো।
মুছুনআপনার ধর্মান্ধতা নিয়ে দ্বি-মতের বিষয়টি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধার সংজ্ঞে দেখছি। কিন্তু যেনে রাখবেন, ধর্ম সম্পর্কে একটা সচেতনতা আগের চেয়ে এখন একটু বেশী। সচেতনভাবে ধর্ম ব্যবহারও বেড়েছে। এই ক্ষেত্রে যখন কেউ ধর্ম পালন করবে, তখন তা গ্রহণযোগ্য হয়। কিন্তু যখন তা কেউ অন্যের উপর চাপিয়ে দেয়, তখন তা আর ধর্মের ভয়ই একমাত্র কারণ থাকে না। আর্ও অনেক কিছু থাকে। এই সময়ে যখন কেউ একই আচরণ করে ক্ষমতা দেখিয়ে তখন তাকে আমি কেবল ধর্মভিরু বলতে পারি না। আমার আর্ও কিছু বলতে হয়। সেই সূত্রে তাকে ধর্মান্ধ না বলে বলতে পারেন ধর্মকে ব্যবহারকারী।
রেটিং এর বিষয়টি ভাবনায় থাকলো। পরেরবার থেকে চর্চা করতে চেষ্টা করবো।
টেলিভিশন নিয়ে আপনার বেশিরভাগ আলোচনা এবং মন্তব্য যথাযথ লেগেছে, ঘটনাচক্রে আমারও মুভিটি দেখা ছিল, আমার মন্তব্য আপনার মতই ছিল, কিন্তু লেখার পর কেউ গ্রাহ্যই করে নাই। যাইহোক তবে ইয়রপিয়ান দৃষ্টিভঙ্গি বলে আপনি যেটা বোঝাতে চাচ্ছেন সেই দোষে সত্যজিৎ থেকে সাইরাস নউরাস্তে পর্যন্ত দুষ্ট। আশলে আমাদের সামাজিক অথবা ধর্মীও বিষয়গুলি উন্মুক্ত করলে কি আমাদের ধুতি খুলে গেল? ফ্রান্স অথবা জার্মানি কিম্বা আমেরিকান নির্মাতারা যখন নাৎসিবাদ অথবা ক্রিস্তিয়ানিতির বিরুদ্ধে ক্যামেরা ধরেন তখন তাদের মতাদর্শকে কোন ধারার বলবো? আর ইউরোপ, আমেরিকা অথবা আমিরাত আমাদের চেনেই গরিব, দুর্যোগগ্রস্ত, দুর্নীতিবাজ আর সস্তা শ্রমবাজার হিশেবে, কিন্তু সেই চেনানোর দোষটা আমাদের নিজেদের মানুষদেরই। তারাই আমাদের দেশটাকে ফকির বানিয়ে রেখেছে যাতে ভিক্ষার বান্দেলতা মোতা হয়। আমাদের যে গর্ব করার মত ইতিহাস, সভ্যটা, সংস্কৃতি,বিদ্যা এবং সম্পদ আছে তা আসলে এদের কাছে অজানা নয়, তবে দাতা ইয়রপ তা জানেনা, ভরা পাতে কেউ ভাত দেবে না তাই
উত্তরমুছুনসুমিত, আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
মুছুনআমাদের ধর্মীয় বিষয়গুলো উন্মুচন করলে ধূতি/লুঙ্গি খুলে যায় না। একটা পজেটিভ বাঙলাদেশের ছবি আমরা দেখাইতে পারি। এটা অন্য প্রসঙ্গ, অন্যভাবে আলোচনা করা যায়। যেমন আমাদের লৌকিক/ ফোক গল্পগুলোতে অনেক কিছু আছে, যা ইউরোপিয়রা দেখেনি। সেগুলো নিয়েও আমরা কাজ করতে পারি। এগুলো স্রেফ ভিন্ন ভিন্ন অপশন।
মুভিটা দেখি আগে। তারপর মতামত দিবো।
উত্তরমুছুন