শুক্রবার, ২৮ জুন, ২০১৩

ছবি : লিন্ডা মেসিইর





















ঘুম থেকে উঠে মনে করছিলাম হরিণ শাবকটির কথা
যার সাথে বন্ধুত্ব কিনা এক মূর্খ সময়ের
স্বপ্নে কতবার তার আত্মার ডাক শুনে কেঁদেছি
ভুল অথবা বিভ্রান্তের চিঠি তবুও
তার কাছ থেকেই এসেছে

রোদ ভালোবেসে যে কিনা তাকিয়ে ছিল সময়ের চোখে
তার অস্থিমজ্জায় ধরে আছে মনুষ্য প্রেম

ঘুমের ইতিহাস বলবার আগে আজ আগামীকাল
আমি স্বপ্নের কথা বলবো, যদিও জানি এই বোবা পৃথিবী
ভালোবাসে একটি নীল ফুলের জন্ম ইতিহাস লিখে রাখতে

আমি তবুও ঘুম থেকে জেগে ওঠা একটি মূর্খ সময়ের বন্ধু
একটি হরিণ শাবকের কথাই বলবো,
যার ত্বক কবে কার কোমল গান্ধার হয়ে সুবাস ছড়ায়

() 

হরিণ

at শুক্রবার, জুন ২৮, ২০১৩  |  No comments

ছবি : লিন্ডা মেসিইর





















ঘুম থেকে উঠে মনে করছিলাম হরিণ শাবকটির কথা
যার সাথে বন্ধুত্ব কিনা এক মূর্খ সময়ের
স্বপ্নে কতবার তার আত্মার ডাক শুনে কেঁদেছি
ভুল অথবা বিভ্রান্তের চিঠি তবুও
তার কাছ থেকেই এসেছে

রোদ ভালোবেসে যে কিনা তাকিয়ে ছিল সময়ের চোখে
তার অস্থিমজ্জায় ধরে আছে মনুষ্য প্রেম

ঘুমের ইতিহাস বলবার আগে আজ আগামীকাল
আমি স্বপ্নের কথা বলবো, যদিও জানি এই বোবা পৃথিবী
ভালোবাসে একটি নীল ফুলের জন্ম ইতিহাস লিখে রাখতে

আমি তবুও ঘুম থেকে জেগে ওঠা একটি মূর্খ সময়ের বন্ধু
একটি হরিণ শাবকের কথাই বলবো,
যার ত্বক কবে কার কোমল গান্ধার হয়ে সুবাস ছড়ায়

() 

Read More

0 মন্তব্য(গুলি):

মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০১৩

ঢাকা তখন আমার খুব একটা পরিচিত নাএর আগে খুব কম আসা হইছেএর মধ্যে বিশেষ কাজে আমি তখন ঢাকায়জিগাতলায় এক বড় ভাই এর বাসায় আগের দিন এসে হাজির হইছিআর এক বন্ধুরে ফোন করে তার খবর নেওয়ার সময় জানলাম সেও তখন ঢাকায়ঢাকায় তখন আমার পরিচিত মানুষের সংখ্যা খুব সম্ভবত তিন কি চারকিন্তু সবার কাছে গিয়ে থাকার মতো হৃদ্যতাও ছিলো নাঐ বড় ভাইয়ের কাছেও তুলনামূলক কম ছিলোএই সুযোগে সেটা হয়ে গেলোএকই সাথে ঐ বন্ধু যখন ঢাকায় আছে, তার সাথে দেখা করা যায় কি না সেই চিন্তা করেই তাকে ফোন দেইদিলাম ফোন, ফোনে কথা বলে জানা গেলো, সে কালকে বিকালে বলাকায় ছবি দেখবেদিল চাহতা হ্যায়আমার জানা ছিলো দেশি-বিদেশী ফিল্ম নিয়ে ঢাকায় তখন দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব হচ্ছেতো তাকে বললাম ঠিক আছে, আমিও দেখবোসেই সূত্রে ফারহান আখতারের প্রথম পরিচালনার ছবি দিল চাহতা হ্যায় বলাকায় দেখা আমার প্রথম ছবিতার পরে আকাশে অনেক মেঘ হইছে, বৃষ্টি হইছেগ্রীষ্ম, বসন্তও আসছে গেছেকর্মের সন্ধ্যানে ঢাকায় আইসা আস্তানাও গাড়া হইছে আমারকিন্তু এতদিনে নানান জায়গায় ছবি দেখা হইলেও বলাকায় আর দেখা হয় নাইতো সেই বলাকায় দেখতে গেছিলাম পরিচালক জাকির হোসেন রাজুর সাম্প্রতিক ছবি  ‘পোড়ামন
আমি যদি বলাকায় সিনেমা দেখার জার্নির কথা চিন্তা করি, তাইলে রীতিমত অধঃপতন হইছেকিন্তু এই ঘটনাকে আমি অধঃপতন হিসেবে না দেখে দেখবো নতুন শুরু হিসেবেসেই দিক থেকে আমার অভিজ্ঞতা মিশ্রভালো মন্দ দুই আছেতা কেন সে প্রসঙ্গে বলার আগে বলি পরিচালক জাকির হোসেন রাজু সম্পর্কেপরিচালক জাকির হোসেন রাজু বাংলাদেশের আশি ও নব্বই দশকের চলচ্চিত্র আন্দোলনের একজন একনিষ্ঠ কর্মীতাঁর সমসাময়িকেরা যেখানে চলচ্চিত্র নির্মাতা পরিচিত হলেও তাদের মূল পেশা দাঁড়িয়েছে অন্য কিছুসেখানে তিনি তাদের থেকে একটু ব্যাতিক্রমব্যতিক্রম এই কারণে যে, তার সময়ের অন্য পরিচালকদের মতো তিনি বিকল্প পথে হাঁটেন নিতিনি হেঁটেছেন প্রথাগত পথেএবং এই পথেই রাজুর প্রচেষ্টাও অনুল্লেখ্য নয়সেই দিক থেকে তিনি আমাদের চলচ্চিত্রের পরিচিত পথের অনেক শক্তিশালী ব্যক্তি হিসেবেও একজনপাশাপাশি তার প্রথম চলচ্চিত্র আমাদের শৈশবের  নায়ক সালমান শাহ্‌র ছবি জীবন সংসারজীবন সংসারের একটা দৃশ্য এখনো আমার মনে আছেসালমানকে বাড়ি থেকে বেড় করে দেওয়ার পর সে নিজের পয়সায় রোজগার করে পিতৃতুল্য বড় ভাই আর মাতৃতুল্য ভাবির জন্য মিষ্টি নিয়ে আসেবাড়ির ভেতর যায় নাবাড়ির চাকরের কাছে এই মিষ্টি দিয়ে পাঠায়চাকর তার এক ছোট ভাইয়ের প্রথম রোজগারের মিষ্টি বলে ভাই-ভাবিকে খাওয়ায়এমন আবেগময় দৃশ্য তিনি নিজে নির্মাণ করছিলেনতার এই ছবি ঐ সময় সুপারহিট হয়েছিলোএর পরবর্তিতেও তিনি বেশ চমৎকার সৃজনশীল সামাজিক গল্প নিয়ে এফডিসির ভেতর থেকেই ছবি করেছেনআর এই কারণেই তার কাছে প্রত্যাশাও অন্য সবার চেয়ে একটু বেশীইসেই প্রত্যাশার প্রতিদান দিতে বেশ কিছুদিন পর তিনি হাজির হলেন পোড়ামনছবি নিয়েআর সেই ছবি আমি আর আমার এক বন্ধু বলাকায় দেখে ফেলেছিছবি দেখার পর প্রথম যে কথা আমি বলবো, তা হলো পারলে ছবিটা দেখে ফেলুন
এবার অন্য প্রসঙ্গে আসিআমাদের দেশে নব্বই দশকের চলচ্চিত্র আন্দোলনকারীরা কিভাবে কিভাবে যেনো ত্রিশ-পয়ত্রিশটা ইরানি ছবির ভিডিও টেপ আবিষ্কার করলোআর এ নিয়ে তাদের কত উল্লাশ আর মাতামাতিইরানি ছবির আদলে তারা ছবি বানানোর স্বপ্নও দেখেছিলোজাকির হোসেন রাজুর পরিচালক সত্ত্বা সৃষ্টি হওয়া সময়ের সাথে এই কথাগুলোর স্মরণ করছি এই কারণে যে, এখন একটা ছেলে ইনারিতু, কিম কি দুক, কার্লোস রেগাদাস, ক্রিস্টোফার নোলান, অনুরাগ কাশ্যপদের অহরহ আবিষ্কার করে তাদের মতো করে সিনেমা বানানোর স্বপ্ন দেখেতাই তাদের কাছে ২০১০ সালে পার্শ্ববর্তি দেশ ভারতের তামিল নাডুতে বা কেরালায় কি ছবি নির্মাণ হবে তা তো তাদের জানাই থাকেএমনকি সেইখানে কোন ছবিটা সমালোচনায় রেটিং বেশী পায়, কোনটা ব্যবসা ভালো করে এই খবরও তাদের জন্য কিছুই নাএইটা বোধহয় অনেকে জানেই নাএই কথাগুলো বলা ঐ জাকির হোসেন রাজু প্রসঙ্গেইএই প্রসঙ্গ পরে আসুকআগে আসুক তার নির্মিত পোড়ামনকেমন করলো বলে আমার মনে হচ্ছে
পোড়ামনের শুরুটা অনেকটা জোর করে গল্পে বেশ কিছু চরিত্রের এস্টাব্লিশ করার মাধ্যমেশুরুর সিন দেখে ভাবছিলাম গল্পে অনেক বেশী জটিলতা/ প্যাচগোছ থাকবেকিন্তু নাদ্বিতীয় তৃতীয় সিন থেকেই বিরতির আগ পর্যন্ত পুরোটাই ফ্ল্যাশ ব্যাকএবং ঐদিনটা ছিলো ঈদের আগের দিনমনে রাইখ্যেন, ঈদের আগের দিনঐদিন ফ্ল্যাশব্যাকে গল্প পিছাইলোএই প্রসঙ্গে কোনও আপত্তি নাইবিরতির পর দেখলাম ঐ গল্পের নায়ক পুলিশ হাজত থেকে পালাইছেআর ডিআইজির সফর উপলক্ষে এই খবর ধামাচাপা পড়ে গেলেও ওসি সাহেবের চাকরি বাঁচানোর চিন্তায়  আসামী ধরতে যায়ঐদিন রাতে আর বাসায় ফিরে নিতার পরের দিন কিন্তু ঈদ মনে রাইখ্যেনগিয়া দেখে, আমগো নায়কের প্রেমিকা নায়িকার বিয়া হইবোবাড়িঘর সাজানো হইতেছেবর যাত্রীও আসেযাই হোক এইখানে ছবি পুরাই হিটকারণ নায়ক মারামারি করতে জানেপিটাইয়া তক্তা বানাইয়া ফেলছেএইসব দেখতে ভালোই লাগেকিন্তু পূজা আর ঈদ যদি স্ক্রিপ্ট রাইটার এক কইরা ফেলে তাইলে তো দিনে তিনটা ফিচার ফিল্মের স্ক্রিপ্ট আমি লিখতে পারিযাক, আমার এমন স্ক্রিপ্ট লেখার আগ্রহ নাইএইভাবে বহু নাটকিয়তায় সিনেমা শেষ হইলোসিনেমার ক্ষণে ক্ষণে দর্শকদের হাতে তালি, শিষ বাজানো আর নিজেদের প্রত্যাশার সাথে গল্পের মিল হইলে পরে তালি শিষ দুইটাই একসাথে এইগুলো ব্যাপক এনজয়ের বিষয় ছিলো আমার জন্য
ছবি দেখতে দেখতে মনে হইতেছিলো, পুরো ছবি বান্দরবানের মতো অসাধারণ লোকেশনে শ্যুট করাএই ছবি মার্কেটিংয়ের একটা বড় পয়েন্টই হইতে পারতো বাংলাদেশের পাহাড়ি প্রকৃতিকিন্তু দুই একটা গানে হাতে গোনা কয়েকটা দৃশ্যের দৃশ্যায়ন ছাড়া ঐ প্রকৃতির ছবিই চোখে পড়লো নাঅন্তত এই বান্দরবান দেইখ্যা আমি মোটেও বান্দরবানের প্রকৃতির আহ্বানে সাড়া দিবো নাযতটা না বন্ধুদের কাছ থেকে বলা, লেখা ও তোলা ছবি দেখে আহ্বানে সাড়া দিতে রাজি
এছাড়া এই ছবি দেখার আগে এই ছবি সম্পর্কে যা জেনে গেছি তাতে এই সিনেমার গল্পটা না বলে ঐ মায়না ছবির গল্পটাই বলি

তামিল প্রযোজক ও পরিচালক প্রভু সলোমনের সপ্তম ছবিউইকিপিডিয়ার তথ্য মতে এই ছবির বাজেট ছিলো ৫০ কোটি রুপিআমাদের পোড়ামনছবির বোধহয় এইখান থেকেই শুরু হইছে পেছানোতার বাজেট কোনও ভাবেই ষাট লাখের বেশী হবে নাঅন্তত তাই ধারণা করিআর এই কারণে গল্প, সংলাপ, চরিত্রের চিত্রায়ন প্রায় একই রকম করে নির্মাণ চেষ্টা করলেও মায়নার আশে পাশেও যায় নি এই ছবিতবে যারা তামিল ছবি দেখে না, খোঁজ খবর রাখে না তাদের কাছে এ্ই গল্প একেবারেই নতুনআর তাদেরকেই সম্ভবত লক্ষ করে এই ছবির দর্শক চিন্তা করে পরিচালক জাকির হোসেন রাজু এই ছবি নির্মাণ করছেসেই লক্ষ্যে সফলতা থাকলেও আমার প্রশ্ন, নকল ছবিই যদি বানাবেন তবে তার জন্য জাকির হোসেন রাজুর মতো পরিচালক কেন? তারপরো আমার একটা চাওয়া আছেযদি নকল ছবি দিয়াও সিনেমা হল মালিকরা হল টিকায়া রাখতে পারে তবে চলুক

‘পোড়ামন’ এ মন পোড়ে না

at মঙ্গলবার, জুন ২৫, ২০১৩  |  2 comments

ঢাকা তখন আমার খুব একটা পরিচিত নাএর আগে খুব কম আসা হইছেএর মধ্যে বিশেষ কাজে আমি তখন ঢাকায়জিগাতলায় এক বড় ভাই এর বাসায় আগের দিন এসে হাজির হইছিআর এক বন্ধুরে ফোন করে তার খবর নেওয়ার সময় জানলাম সেও তখন ঢাকায়ঢাকায় তখন আমার পরিচিত মানুষের সংখ্যা খুব সম্ভবত তিন কি চারকিন্তু সবার কাছে গিয়ে থাকার মতো হৃদ্যতাও ছিলো নাঐ বড় ভাইয়ের কাছেও তুলনামূলক কম ছিলোএই সুযোগে সেটা হয়ে গেলোএকই সাথে ঐ বন্ধু যখন ঢাকায় আছে, তার সাথে দেখা করা যায় কি না সেই চিন্তা করেই তাকে ফোন দেইদিলাম ফোন, ফোনে কথা বলে জানা গেলো, সে কালকে বিকালে বলাকায় ছবি দেখবেদিল চাহতা হ্যায়আমার জানা ছিলো দেশি-বিদেশী ফিল্ম নিয়ে ঢাকায় তখন দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব হচ্ছেতো তাকে বললাম ঠিক আছে, আমিও দেখবোসেই সূত্রে ফারহান আখতারের প্রথম পরিচালনার ছবি দিল চাহতা হ্যায় বলাকায় দেখা আমার প্রথম ছবিতার পরে আকাশে অনেক মেঘ হইছে, বৃষ্টি হইছেগ্রীষ্ম, বসন্তও আসছে গেছেকর্মের সন্ধ্যানে ঢাকায় আইসা আস্তানাও গাড়া হইছে আমারকিন্তু এতদিনে নানান জায়গায় ছবি দেখা হইলেও বলাকায় আর দেখা হয় নাইতো সেই বলাকায় দেখতে গেছিলাম পরিচালক জাকির হোসেন রাজুর সাম্প্রতিক ছবি  ‘পোড়ামন
আমি যদি বলাকায় সিনেমা দেখার জার্নির কথা চিন্তা করি, তাইলে রীতিমত অধঃপতন হইছেকিন্তু এই ঘটনাকে আমি অধঃপতন হিসেবে না দেখে দেখবো নতুন শুরু হিসেবেসেই দিক থেকে আমার অভিজ্ঞতা মিশ্রভালো মন্দ দুই আছেতা কেন সে প্রসঙ্গে বলার আগে বলি পরিচালক জাকির হোসেন রাজু সম্পর্কেপরিচালক জাকির হোসেন রাজু বাংলাদেশের আশি ও নব্বই দশকের চলচ্চিত্র আন্দোলনের একজন একনিষ্ঠ কর্মীতাঁর সমসাময়িকেরা যেখানে চলচ্চিত্র নির্মাতা পরিচিত হলেও তাদের মূল পেশা দাঁড়িয়েছে অন্য কিছুসেখানে তিনি তাদের থেকে একটু ব্যাতিক্রমব্যতিক্রম এই কারণে যে, তার সময়ের অন্য পরিচালকদের মতো তিনি বিকল্প পথে হাঁটেন নিতিনি হেঁটেছেন প্রথাগত পথেএবং এই পথেই রাজুর প্রচেষ্টাও অনুল্লেখ্য নয়সেই দিক থেকে তিনি আমাদের চলচ্চিত্রের পরিচিত পথের অনেক শক্তিশালী ব্যক্তি হিসেবেও একজনপাশাপাশি তার প্রথম চলচ্চিত্র আমাদের শৈশবের  নায়ক সালমান শাহ্‌র ছবি জীবন সংসারজীবন সংসারের একটা দৃশ্য এখনো আমার মনে আছেসালমানকে বাড়ি থেকে বেড় করে দেওয়ার পর সে নিজের পয়সায় রোজগার করে পিতৃতুল্য বড় ভাই আর মাতৃতুল্য ভাবির জন্য মিষ্টি নিয়ে আসেবাড়ির ভেতর যায় নাবাড়ির চাকরের কাছে এই মিষ্টি দিয়ে পাঠায়চাকর তার এক ছোট ভাইয়ের প্রথম রোজগারের মিষ্টি বলে ভাই-ভাবিকে খাওয়ায়এমন আবেগময় দৃশ্য তিনি নিজে নির্মাণ করছিলেনতার এই ছবি ঐ সময় সুপারহিট হয়েছিলোএর পরবর্তিতেও তিনি বেশ চমৎকার সৃজনশীল সামাজিক গল্প নিয়ে এফডিসির ভেতর থেকেই ছবি করেছেনআর এই কারণেই তার কাছে প্রত্যাশাও অন্য সবার চেয়ে একটু বেশীইসেই প্রত্যাশার প্রতিদান দিতে বেশ কিছুদিন পর তিনি হাজির হলেন পোড়ামনছবি নিয়েআর সেই ছবি আমি আর আমার এক বন্ধু বলাকায় দেখে ফেলেছিছবি দেখার পর প্রথম যে কথা আমি বলবো, তা হলো পারলে ছবিটা দেখে ফেলুন
এবার অন্য প্রসঙ্গে আসিআমাদের দেশে নব্বই দশকের চলচ্চিত্র আন্দোলনকারীরা কিভাবে কিভাবে যেনো ত্রিশ-পয়ত্রিশটা ইরানি ছবির ভিডিও টেপ আবিষ্কার করলোআর এ নিয়ে তাদের কত উল্লাশ আর মাতামাতিইরানি ছবির আদলে তারা ছবি বানানোর স্বপ্নও দেখেছিলোজাকির হোসেন রাজুর পরিচালক সত্ত্বা সৃষ্টি হওয়া সময়ের সাথে এই কথাগুলোর স্মরণ করছি এই কারণে যে, এখন একটা ছেলে ইনারিতু, কিম কি দুক, কার্লোস রেগাদাস, ক্রিস্টোফার নোলান, অনুরাগ কাশ্যপদের অহরহ আবিষ্কার করে তাদের মতো করে সিনেমা বানানোর স্বপ্ন দেখেতাই তাদের কাছে ২০১০ সালে পার্শ্ববর্তি দেশ ভারতের তামিল নাডুতে বা কেরালায় কি ছবি নির্মাণ হবে তা তো তাদের জানাই থাকেএমনকি সেইখানে কোন ছবিটা সমালোচনায় রেটিং বেশী পায়, কোনটা ব্যবসা ভালো করে এই খবরও তাদের জন্য কিছুই নাএইটা বোধহয় অনেকে জানেই নাএই কথাগুলো বলা ঐ জাকির হোসেন রাজু প্রসঙ্গেইএই প্রসঙ্গ পরে আসুকআগে আসুক তার নির্মিত পোড়ামনকেমন করলো বলে আমার মনে হচ্ছে
পোড়ামনের শুরুটা অনেকটা জোর করে গল্পে বেশ কিছু চরিত্রের এস্টাব্লিশ করার মাধ্যমেশুরুর সিন দেখে ভাবছিলাম গল্পে অনেক বেশী জটিলতা/ প্যাচগোছ থাকবেকিন্তু নাদ্বিতীয় তৃতীয় সিন থেকেই বিরতির আগ পর্যন্ত পুরোটাই ফ্ল্যাশ ব্যাকএবং ঐদিনটা ছিলো ঈদের আগের দিনমনে রাইখ্যেন, ঈদের আগের দিনঐদিন ফ্ল্যাশব্যাকে গল্প পিছাইলোএই প্রসঙ্গে কোনও আপত্তি নাইবিরতির পর দেখলাম ঐ গল্পের নায়ক পুলিশ হাজত থেকে পালাইছেআর ডিআইজির সফর উপলক্ষে এই খবর ধামাচাপা পড়ে গেলেও ওসি সাহেবের চাকরি বাঁচানোর চিন্তায়  আসামী ধরতে যায়ঐদিন রাতে আর বাসায় ফিরে নিতার পরের দিন কিন্তু ঈদ মনে রাইখ্যেনগিয়া দেখে, আমগো নায়কের প্রেমিকা নায়িকার বিয়া হইবোবাড়িঘর সাজানো হইতেছেবর যাত্রীও আসেযাই হোক এইখানে ছবি পুরাই হিটকারণ নায়ক মারামারি করতে জানেপিটাইয়া তক্তা বানাইয়া ফেলছেএইসব দেখতে ভালোই লাগেকিন্তু পূজা আর ঈদ যদি স্ক্রিপ্ট রাইটার এক কইরা ফেলে তাইলে তো দিনে তিনটা ফিচার ফিল্মের স্ক্রিপ্ট আমি লিখতে পারিযাক, আমার এমন স্ক্রিপ্ট লেখার আগ্রহ নাইএইভাবে বহু নাটকিয়তায় সিনেমা শেষ হইলোসিনেমার ক্ষণে ক্ষণে দর্শকদের হাতে তালি, শিষ বাজানো আর নিজেদের প্রত্যাশার সাথে গল্পের মিল হইলে পরে তালি শিষ দুইটাই একসাথে এইগুলো ব্যাপক এনজয়ের বিষয় ছিলো আমার জন্য
ছবি দেখতে দেখতে মনে হইতেছিলো, পুরো ছবি বান্দরবানের মতো অসাধারণ লোকেশনে শ্যুট করাএই ছবি মার্কেটিংয়ের একটা বড় পয়েন্টই হইতে পারতো বাংলাদেশের পাহাড়ি প্রকৃতিকিন্তু দুই একটা গানে হাতে গোনা কয়েকটা দৃশ্যের দৃশ্যায়ন ছাড়া ঐ প্রকৃতির ছবিই চোখে পড়লো নাঅন্তত এই বান্দরবান দেইখ্যা আমি মোটেও বান্দরবানের প্রকৃতির আহ্বানে সাড়া দিবো নাযতটা না বন্ধুদের কাছ থেকে বলা, লেখা ও তোলা ছবি দেখে আহ্বানে সাড়া দিতে রাজি
এছাড়া এই ছবি দেখার আগে এই ছবি সম্পর্কে যা জেনে গেছি তাতে এই সিনেমার গল্পটা না বলে ঐ মায়না ছবির গল্পটাই বলি

তামিল প্রযোজক ও পরিচালক প্রভু সলোমনের সপ্তম ছবিউইকিপিডিয়ার তথ্য মতে এই ছবির বাজেট ছিলো ৫০ কোটি রুপিআমাদের পোড়ামনছবির বোধহয় এইখান থেকেই শুরু হইছে পেছানোতার বাজেট কোনও ভাবেই ষাট লাখের বেশী হবে নাঅন্তত তাই ধারণা করিআর এই কারণে গল্প, সংলাপ, চরিত্রের চিত্রায়ন প্রায় একই রকম করে নির্মাণ চেষ্টা করলেও মায়নার আশে পাশেও যায় নি এই ছবিতবে যারা তামিল ছবি দেখে না, খোঁজ খবর রাখে না তাদের কাছে এ্ই গল্প একেবারেই নতুনআর তাদেরকেই সম্ভবত লক্ষ করে এই ছবির দর্শক চিন্তা করে পরিচালক জাকির হোসেন রাজু এই ছবি নির্মাণ করছেসেই লক্ষ্যে সফলতা থাকলেও আমার প্রশ্ন, নকল ছবিই যদি বানাবেন তবে তার জন্য জাকির হোসেন রাজুর মতো পরিচালক কেন? তারপরো আমার একটা চাওয়া আছেযদি নকল ছবি দিয়াও সিনেমা হল মালিকরা হল টিকায়া রাখতে পারে তবে চলুক

Read More

2 মন্তব্য(গুলি):

সোমবার, ৩ জুন, ২০১৩

ফ্রানৎস কাফকা একটা জাদুর নাম। সাহিত্যের পাঠকদের কাছে এই কথা নতুন করে বলার কিছু নাই। আমার বদ স্বভাব, যারে মানুষ বেশী গুরুত্ব দেয় তারে একটু এড়াইয়া চলি। যদি না সে আবার আমার ঘাড়ে আছড় হয় এই ভয়ে। কসম, কইতেছি- প্রিয় জীবনানন্দের কবিতা প্রথম পড়ার পর আমি তারে এড়াইয়া চলতাম। এখনো এই বদ স্বভাব যায় নাই। এই কারণে আমার নানান সময় নানান ভাবে পস্তাইতে হয়। কাফকা যে একটা জাদু, তা জানতাম এবং মানিও। কিন্তু সমস্যা হইতেছে যেই চোদনা (বাজে অর্থে নিবেন না প্লিজ) বিশ্ব সাহিত্যের তাবৎ পোংটাদের মাঝে সবচে বেশী প্রভাব খাটাইতে পারে, তারে হজম করতে গিয়া না আমি নিজেই হজম হইয়া যাই, এই ভয়ে আমি কাফকারেও এড়াইয়া চলছি অনেক দিন

সিনেমার ক্ষেত্রেও আমি প্রায় একই নীতি মানি। যেসব ছবি বা নির্মাতারা চারপাশের মানুষকে বেশী মুগ্ধ করে তাদের ক্লাসিক কর্ম আমি দেখতে চাই না। বলতে গেলে সাহস পাই না। যদি কোনও জড়তা কাজ করে এই ভয়ে। সাহিত্যের ক্ষেত্রে আমার এই ভয় কাটানোর পেছনে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এর অনেক বড় অবদান। এক সাক্ষাৎকারে জীবনানন্দরে প্রশ্ন করার পর আমার উত্তর শুনে তিনি বলছিলেন, জীবনানন্দরে যে ভয় করো। ভয় কাটানোর জন্যও তোমার বেশি করে পড়া দরকার। এখন অবশ্য তাই করি। বেশী করে পড়ি, আর বেশী করে ছবি দেখি

কাফকা : সিনেমা ও ফ্রানৎস কাফকার জাদুকরি জগৎ

at সোমবার, জুন ০৩, ২০১৩  |  No comments

ফ্রানৎস কাফকা একটা জাদুর নাম। সাহিত্যের পাঠকদের কাছে এই কথা নতুন করে বলার কিছু নাই। আমার বদ স্বভাব, যারে মানুষ বেশী গুরুত্ব দেয় তারে একটু এড়াইয়া চলি। যদি না সে আবার আমার ঘাড়ে আছড় হয় এই ভয়ে। কসম, কইতেছি- প্রিয় জীবনানন্দের কবিতা প্রথম পড়ার পর আমি তারে এড়াইয়া চলতাম। এখনো এই বদ স্বভাব যায় নাই। এই কারণে আমার নানান সময় নানান ভাবে পস্তাইতে হয়। কাফকা যে একটা জাদু, তা জানতাম এবং মানিও। কিন্তু সমস্যা হইতেছে যেই চোদনা (বাজে অর্থে নিবেন না প্লিজ) বিশ্ব সাহিত্যের তাবৎ পোংটাদের মাঝে সবচে বেশী প্রভাব খাটাইতে পারে, তারে হজম করতে গিয়া না আমি নিজেই হজম হইয়া যাই, এই ভয়ে আমি কাফকারেও এড়াইয়া চলছি অনেক দিন

সিনেমার ক্ষেত্রেও আমি প্রায় একই নীতি মানি। যেসব ছবি বা নির্মাতারা চারপাশের মানুষকে বেশী মুগ্ধ করে তাদের ক্লাসিক কর্ম আমি দেখতে চাই না। বলতে গেলে সাহস পাই না। যদি কোনও জড়তা কাজ করে এই ভয়ে। সাহিত্যের ক্ষেত্রে আমার এই ভয় কাটানোর পেছনে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এর অনেক বড় অবদান। এক সাক্ষাৎকারে জীবনানন্দরে প্রশ্ন করার পর আমার উত্তর শুনে তিনি বলছিলেন, জীবনানন্দরে যে ভয় করো। ভয় কাটানোর জন্যও তোমার বেশি করে পড়া দরকার। এখন অবশ্য তাই করি। বেশী করে পড়ি, আর বেশী করে ছবি দেখি

Read More

0 মন্তব্য(গুলি):

এই সাইটের যে কোনও লেখা যে কেউ অনলাইনে ব্যবহার করতে পারবে। তবে লেখকের নাম ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক।

Blogger template Proudly Powered by Blogger. Arranged By: এতক্ষণে অরিন্দম