বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

বিনয়কে নিয়ে অনুভূতির কথামালা

at বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৫  |  No comments



বিনয় মজুমদার
এক আশ্চর্য প্রদীপযে প্রদীপ নিজে জ্বলে-পুড়ে শুধু আলোই দেয় না মনের ভেতর জ্বালায় শিখার বুদবুদযেখান থেকে তরল আগুন এক সময় দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হয়ে দেহের ভেতর, মনের ভেতর জ্বলে উঠে বিনয়কিন্তু মোটেও বিনয় তৈরি হয় না বিপরীতে আগ্রাসন তৈরি হয়এই আগ্রাসনে বিনয় পাঠের ইচ্ছা-আকাঙ্খার অন্য সকল পাঠ্য তালিকা স্থগিত হয়ে যায়কদাচিৎ যদিও অন্য কোনও পাঠ্যপুস্তক (যে বই পড়ার প্রয়োজন) হাতের কাছে চলে আসে তাও টেকে নাযদিও নিজের মনের মতো করে ভাবলে বিনয়ের কবিতা ও তার ব্যক্তি জীবনে তুমুল বৈপরিত্য চোখে পরেহতে পারে তা আমার সাময়িক ভাবনার পরিণতিকিন্তু বৈপরিত্য তার জীবনে ও কবিতার রয়েছেইতা জীবন ও কবিতা একই সমান্তরালে দেখলেই বেড়িয়ে আসেসেই বিনয়ের সাথে আমার পরিচয় খুব অল্প দিনেরঅবশ্য এর চেয়ে অল্পদিনের পরিচয়েও আমার বন্ধু হওয়া সহজ

বিনয়কে নিয়ে সম্ভবত প্রথম যে বাক্যটি শুনেছিলাম তা হলো- অসম্ভব অভিমানী কবিতখন বিনয়ের দ্বার খুলে দেয়ার ভূমিকাকারী বিনয়কে দেখাত বোদলেয়ারের মতো করেতখন পর্যন্ত বিনয়ের দুটো কবিতাই মাত্র পড়া হয়েছেআর বিনয় সম্পর্কে কিছু আলোচনা-সমালোচনাএই আলোচনা-সমালোচনা পড়ার পর কেবল তাঁর কবিতায় জীবন খুঁজেছি, জীবনে কবিতা খুঁজেছিযখন মিল খুঁজে পেয়েছি তখন ভালো লেগেছেযখন অমিল খুঁজে পেয়েছি তখন মন্দ লেগেছেজীবন ও বাস্তবতার সাথে কবিতার খোজা-খোঁজিতে যত বৈপরিত্য দেখেছি তখনই তাকে তাঁর কবিতার দূর্বলতা হিসেবে চোখে লেগেছেবাস্তব জীবনে যে কবির ভগ্নদশার পরিচালক গায়ত্রী চক্রবর্তিসেই চক্রবর্তিকে নিয়ে কেন কবিতা লেখা হলো প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন - কাউকে নিয়ে তো লিখতে হয়- আমগাছ, কাঠালগাছ, রজনীগন্ধ্যা নিয়ে কি চিরকাল লেখা যায়?’ বিনয় মূলত এই ধাঁচেরই একজন কবিনির্মাণ বিনির্মাণের মাঝে তিনি স্বতন্ত্র

তাঁর কবিতার ভেতরকার গুপ্ততা ধীরে ধীরে আবার হঠাৎই ঔজ্জ্বল্যতা ছড়ায়ব্যক্তির জীবন বৈপরিত্য পেয়ে কবিতায় এসেছেকবিতা এই বৈপরিত্য পেয়ে রূপসীও হয়েছে মাঝে মাঝেকিন্তু কিছু কিছু বৈপরিত্য তীব্র আকারে ধরা পড়ে চোখেবিনয়ের কবিতায় বিনয় কিছু আপ্তবাক্য বা দর্শন তৈরি করেছেনএই দর্শনের মাঝে একটা হলো-
মানুষ নিকটে গেলে প্রকৃত সারস উড়ে যায়
       এই আপ্তবাক্য বা দর্শনটির কথা আমাদের জানাই আছেতা জানতে গিয়েই আমারা তার কবিতার শুরুটা নিশ্চয়ই পড়ে থাকিশুরুর ভাবনায় একটা বৈপরিত্য বসবাস করছে যেমন শুরুতেই রয়েছে-
মুকুরে প্রতিফলিত সূর্যালোক স্বল্পকাল হাসে
এই বাক্য দিয়ে শুরু করে যখন পূর্বোক্ত বাক্যে শেষ হয় সে ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য যদি শেষ বাক্যটি না হয়ে যদি সম্পূর্ণ কবিতাটি হয় তাহলে মনে করতে পারি একই ভাবনার প্রকাশ তিনি সম্পূর্ণ কবিতাটিতে দেখান নিএই ক্ষেত্রে খুব সহজেই আরা ভেবে নিতে পারি দুইটি সমাধান- এক. বিনয়ের কবিতার স্টাইল বা ফর্মই এটা, একই কথা ঘুরিয়ে বলা; দুই. বিনয় হয়তো প্রথম বাক্যটি ভেবেই লিখতে বসেছিলেন, সর্বশেষ বাক্যটি স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে চলে এসেছেযদি তা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই চলে আসে তবে তা এটা রূপান্তরের ধারাপাতে বন্দি হয়ে যায় ফলে শুরুর কথাকে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়েই সকল কথার অবতারণ নয়আর কবিতার শেষটাও অন্য কোথাওযা একই কবিতায় বৈপরিত্য উপস্থাপন করেঅন্ততঃপক্ষে আমি মনে করি কবি ও কবিতার ভেতর বৈপরিত্য থাকা সম্ভবকিন্তু একই কবিতার ভাবে বক্তব্যে তা কাম্য নয়তবে যদি তাই বিনয়-এর নিজস্ব ঢং এর হয়ে থাকে তবে তাই হোক!

Share
Posted by eliuskomol
About the Author

Write admin description here..

0 মন্তব্য(গুলি):

এই সাইটের যে কোনও লেখা যে কেউ অনলাইনে ব্যবহার করতে পারবে। তবে লেখকের নাম ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক।

Blogger template Proudly Powered by Blogger. Arranged By: এতক্ষণে অরিন্দম